শনিবার সুনামগঞ্জে চলন্ত বাসে এক তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টা করা ও বাস থেকে ফেলে দেয়ার ঘটনার মূল আসামি বাসচালক শহীদ মিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। 

রোববার এই ঘটনার তদন্ত ও মামলার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি হাফিজ আজিজ। তিনি সাংবাদিকদের সামনে শহীদকে গ্রেফতারের ঘটনাটি তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, গত ২৬ ডিসেম্বর মাহাদ এন্ড নাশা পরিবহনের সিলেট-জ-১১০২২৩ নম্বরের বাসটি সিলেট থেকে সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের উদ্দেশে রওনা হয়। দুপুর অনুমানিক ২টার দিকে বাসটি সুনামগঞ্জ পৌঁছায়। এরপর সুনামগঞ্জ থেকে দিরাইয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। সেই বাসের চালক ছিলেন শহীদ মিয়া। 

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, সেদিন ওই তরুণীকে তার দুলাভাই সিলেটের লামাকাজি থেকে সুনামগঞ্জের দিরাইপুর যাওয়ার জন্য ওই বাসটিতে তুলে দেন। বাসটি যখন  দিরাইয়ের পাতারিয়ায় পৌঁছায় ততক্ষণে প্রায় সব যাত্রী বাসটি থেকে নেমে গেছেন। এই সুযোগে চালক শহীদ মিয়া ড্রাইভিং সিটে হেল্পারকে বসিয়ে বাসের পেছনের দিকে এসে তরুণীকে চলন্ত বাসে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এ সময় ওই তরুণী চিৎকার শুরু করেন। 

তরুণীর চিৎকার শুনে সুজানগর গ্রামসহ আশপাশের লোকজন গাড়িটি আটকের চেষ্টা করে। তখন পরিস্থিতি প্রতিকূল দেখে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে চালক শহীদ মিয়া তরুণীকে চলন্ত বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। রাস্তায় পড়ে তরুণী গুরুতর আহত হন। 

পথচারীরা তরুণীকে উদ্ধার করে সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে পাঠিয়ে দেয়। 

আসামি শহীদকে গ্রেফতারের বিষয়ে অতিরিক্ত ডিআইজি জানান, সিআইডি সদর দপ্তর থেকে আসামিকে গ্রেফতারের জন্য সাঁড়াশি অভিযান শুরু হয়। অভিযানের নেতৃত্ব দেন সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তাধর। অভিযানের একপর্যায়ে শহীদের ছােট ভাই মাে. কছির ও দুলাভাই সুমনকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী শহীদের অবস্থান নিশ্চিত করার জন্য ভােগড়া বাইপাস এবং উত্তরা দিয়াবাড়িতে অভিযান চালানো হয়। 

তবে অভিযান চালানোর সময় সিআইডির কাছে খবর আসে যে, শহীদ ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে বাসে সুনামগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। সেই তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার সুনামগঞ্জের পুরাতন বাস স্ট্যান্ড থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

হাফিজ আজিজ বলেন, অতি অল্প সময়ে সিআইডি এই ঘটনার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করে পেশাদারিত্ব প্রদর্শনে সক্ষম হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শহীদ মিয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।

এআর/এনএফ