যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে গঠিত জোট ‘কোয়াড’-এ বাংলাদেশ যুক্ত হলে ঢাকা-বেইজিংয়ের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অনেক খারাপ হবে- চীনা রাষ্ট্রদূতের এমন মন্তব্য আমলে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, বাংলাদেশের তাদের পররাষ্ট্র নীতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রাখে।

বুধবার (১২ মে) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকরা কোয়াড ইস্যুতে চীনা রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দেশটির মুখপাত্র নেড প্রাইস এ কথা বলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, চীনা রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য আমাদের নজরে এসেছে। আমরা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে শ্রদ্ধা করি। আমরা মনে করি, বাংলাদেশের তাদের পররাষ্ট্র নীতি অনুযায়ী যেকোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার আছে। আমরা এ বিষয়ে বাংলাদেশকে শ্রদ্ধা জানাই।

বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক ভালো সম্পর্ক রয়েছে জানিয়ে নেড প্রাইস বলেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুসহ বিভিন্ন মানবিক ক্ষেত্রে ওয়াশিংটন ও ঢাকা অংশীদার।

কোয়াড ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের মুখপাত্র বলেন, কোয়াডের উদ্দেশ্য হচ্ছে, স্বাধীন ও গণতন্ত্রমনা কয়েকটি দেশ নিয়ে স্বাধীন ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিককে এগিয়ে নেওয়া।

সোমবার (১০ মে) ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেট অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে ভার্চুয়াল মতবিনিময়ে কোয়াড ইস্যুতে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেছেন, আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, চার সদস্য বিশিষ্ট কোয়াডে যুক্ত হলে বাংলাদেশের জন্য ভালো হবে না। কারণ, এর ফলে চীনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

চীনা রাষ্ট্রদূতের এমন মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ১১ মে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, চীনা রাষ্ট্রদূত আগ বাড়িয়ে কথা বলেছে। 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, আমরা স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র এবং আমাদের পররাষ্ট্রনীতি আমরা নির্ধারণ করব। চীনের রাষ্ট্রদূত আগ বাড়িয়ে মন্তব্য করেছেন, আমরা কোয়াড নিয়ে কারও সঙ্গে আলোচনা করিনি। রাষ্ট্রদূত লি জিমিং-এর বক্তব্যকে দুঃখজনক বলেও মন্তব্য করেন মোমেন।

এদিকে, বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় চীনা উপহারের পাঁচ লাখ টিকা পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের কাছে হস্তান্তর করেন রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। টিকা হস্তান্তর শেষে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন চীনা রাষ্ট্রদূত। আলোচনার এক ফাঁকে পররাষ্ট্রসচিব কোয়াড ইস্যুতে বাংলাদেশকে নিয়ে মন্তব্যের ব্যাখ্যা চান। জবাবে চীনা রাষ্ট্রদূত জানান, একজন চীনা নাগরিক হিসেবে ভাষাগত কারণে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। রাষ্ট্রদূত বিষয়টির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।

এনআই/এইচকে