গণপূর্তের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীকে জিজ্ঞাসাবাদ
স্বর্ণ চোরাকারবারি বলে আখ্যা পাওয়া ও বিতর্কিত ব্যবসায়ী মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে গণপূর্ত অধিদফতরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার বসুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ (বুধবার) সকালে প্রায় ২ ঘণ্টা যাবৎ কমিশনের উপ-পরিচালক সামছুল আলমের নেতৃত্বে একটি টিম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। একই অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের কথা থাকলেও উপস্থিত না হয়ে সময় চেয়ে আবেদন করেন রাজউকের পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম।
এর আগে গত ৮ ডিসেম্বর রাজউকের দুই সিবিএ নেতা ওবায়দুল্লাহ হক ও জলিলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ১০ ডিসেম্বর ডিএনসিসি ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শফিকুল ওরফে সোনা শফিক ও ডিএনসিসির সাবেক কমিশনার বিএনপি নেতা এমএ কাউয়ুমকে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
কে এই গোল্ডেন মনির
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এক সময়ে গামছা বিক্রেতা ছিলেন মনির হোসেন। স্বর্ণ চোরাকারবারির পাশপাশি জমির ব্যবসার ‘মাফিয়া’ হিসাবেও তার পরিচয় আছে। তবে তিনি যে বিপুল অর্থ-বিত্তের মালিক হয়েছেন সে বিষয়েটি সামনে আসে নভেম্বরে তার বাড্ডার বাড়িতে অভিযানের পর। বিএনপির সঙ্গে মনিরের সম্পৃক্ততার ইঙ্গিতও মিলেছে। নভেম্বরের শেষ দিকে মনিরকে গ্রেফতারের দিন তার বাড়ি থেকে ৯ লাখ টাকা মূল্যমানের বিদেশি মুদ্রাসহ ১ কোটি ৯ লাখ টাকা, চার লিটার মদ, ৮ কেজি স্বর্ণ, একটি বিদেশি পিস্তল, কয়েক রাউন্ড গুলি উদ্ধারের কথাও জানানো হয়। পরে র্যাবের মুখপাত্র আশিক বিল্লাহ সাংবাদিকদের কাছে অভিযানের বিস্তারিত তুলে ধরেন, যাতে মনিরের কোটি কোটি টাকার সম্পদের খোঁজ পাওয়ার কথা জানানো হয়। বাড্ডা, নিকেতন, কেরানীগঞ্জ, উত্তরা, নিকুঞ্জ এলাকায় অবৈধভাবে নেওয়া ২ শতাধিক প্লট-ফ্ল্যাট তার আছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। মনিরের বাবা কেরানীগঞ্জের বাসিন্দা সিরাজ মিয়া ছিলেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তিনি ঢাকার নিউ মার্কেট ও গাওছিয়া মার্কেট এলাকায় ফেরি করে গামছা বিক্রি করতেন।
দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে গোল্ডেন মনিরের ৬১০ কোটি টাকা ও তার স্ত্রী রওশন আক্তারের ৬ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে তাদের সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিস পাঠিয়েছে দুদক। এছাড়া গত ৩ ডিসেম্বর ৩ কোটি ১০ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের অন্য মামলায় গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে দুদক।
বিজ্ঞাপন
স্বর্ণ চোরাচালান, অবৈধ সম্পদ অর্জন, বেআইনিভাবে আগ্নেয়াস্ত্র রাখা, প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে গত ২১ নভেম্বর গোল্ডেন মনিরকে রাজধানীর বাড্ডায় তার নিজের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তিনি বর্তমানে রিমান্ডে আছেন।
এফএআর/এনএফ