মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার আসামি সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার কথা বলে আদালতে যান। কিন্তু আদালতে গিয়ে তা দিতে অস্বীকৃতি জানান।

সোমবার (১৭ মে) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, বাবুল আক্তার প্রথমে আমাদের কাছে বলেছিলেন আদালতে গিয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেবেন। কিন্তু আদালতে গিয়ে তিনি জবানবন্দি দিতে অস্বীকৃতি জানান। 

বাবুল আক্তার মিতু হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, ‘তিনি ১৬৪ ধারা করেননি, ডিকলাইন করেছেন।’
 
রিমান্ডে তিনি ‘খুনের’ কথা স্বীকার করেছেন কি না, প্রশ্নের জবাবে সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, ‘আমাদের কাছে স্বীকার করেও তো লাভ নেই। আদালতে গিয়ে স্বীকার করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘বাবুল আক্তার রিমান্ডে আমাদের কাছে মিতু হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে গুরত্বপূর্ণ কিছু তথ্য দিয়েছেন। তদন্তের বিষয় নিয়ে এর বাইরে কোনো কিছু বলতে পারব না।’
 
তদন্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করছিলেন। কিন্তু আদালতের খাসকামরায় তিন ঘণ্টা বসে থাকার পরও জবানবন্দি দেননি। জবানবন্দি দিতে রাজি না হওয়ায় পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠান।’ 

বাবুলকে নতুন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, এ বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

এর আগে ১২ মে (বুধবার) দুপুরে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার জাহানের আদালত মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় স্বামী বাবুল আক্তারের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলেকে স্কুলে পৌঁছে দিতে বের হওয়ার পর চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড় এলাকায় খুন হন মাহমুদা খাতুন মিতু। ঘটনার পরপরই তৎকালীন এসপি বাবুল আকতার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। এরপর ভিডিও ফুটেজ দেখে কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়। শুরু থেকে চট্টগ্রাম পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) মামলাটির তদন্ত করে। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালত মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)। 

চলতি মাসে বাবুল আক্তারের ব্যবসায়ীক সহযোগী সাইফুল ও মামুন নামে দুজন আদালতের জবানবন্দিতে জানান বাবুল আক্তার স্ত্রীকে হত্যার জন্য খুনিদের তিন লাখ টাকা দেন। এরপর ১১ মে বাবুল আক্তারকে চট্টগ্রামে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। জিজ্ঞাসাবাদে মিতু হত্যার ঘটনায় তাকে হেফাজতে নেয় পিবিআই। এরপর বাবুল আক্তারসহ আটজনের বিরুদ্ধে ১২ মে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন। 

কেএম/জেডএস