ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র (ডিএসসিসি) ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, আগামী মাসের ২০ তারিখের মধ্যে করপোরেশনের ৭১৫ কি.মি. এবং ওয়াসার কাছ থেকে পাওয়া ১৮৫ কি.মি. বদ্ধ নর্দমার মুখ পরিষ্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে চলেছি। আমাদের সার্বিক কর্মকাণ্ডের ফলে এই বর্ষায় আমরা ঢাকাবাসীকে জলাবদ্ধতার কবল থেকে বহুলাংশে মুক্তি দিতে পারব বলে আশাবাদী।

বুধবার (১৯ মে) নগর ভবনের মেয়র হানিফ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় বিগত এক বছরের সার্বিক কার্যক্রম ও অগ্রগতি নিয়ে ‘উন্নত ঢাকার ভিত রচনা’ শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

মেয়র বলেন, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর ওয়াসার কাছ থেকে খাল ও বক্স কালভার্টগুলো আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। দায়িত্ব পেয়েই দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ২ জানুয়ারি থেকে দুটি বক্স কালভার্ট ও চারটি খাল থেকে বর্জ্য ও পলি অপসারণ কার্যক্রম শুরু করে। একইসঙ্গে সেসব খালের সীমানা নির্ধারণ এবং অবৈধ দখলে থাকা জায়গা পুনরুদ্ধার করেছি। জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত আমরা নিজস্ব অর্থায়নেই সেসব খাল ও বক্স কালভার্টের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও খনন কাজ সম্পন্ন করছি। 

তিনি বলেন, আপনারা জেনে খুশি হবেন যে, খাল ও বক্স কালভার্টগুলো থেকে আমরা ১০ লক্ষাধিক টন পলি ও বর্জ্য অপসারণ করতে সক্ষম হয়েছি এবং খাল ও বক্স কালভার্টগুলোতে দৃশ্যমানভাবে পানি প্রবাহ বেড়েছে। ওয়াসার কাছ থেকে পাওয়া কমলাপুর ও ধোলাইখাল পাম্প স্টেশনের ছয়টি পাম্প মেশিনের মধ্যে কমলাপুরের একটি এবং ধোলাইখালের দুটি পাম্প মেশিন সচল করতে সক্ষম হয়েছি এবং বাকি তিনটি পাম্প মেশিন সচল করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। একই সঙ্গে আমরা ৩০টি ভ্রাম্যমাণ পাম্প মেশিন ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার শেষ পর্যায়ে রয়েছি।

তাপস বলেন, আমার নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষিত ঐতিহ্যের ঢাকা, সুন্দর ঢাকা সচল ঢাকা, সুশাসিত ঢাকা ও আধুনিক ঢাকার রূপরেখাকে সাদরে গ্রহণ করে ঢাকাবাসী আমাকে তাদের সেবা করার সুযোগ দেন। নির্বাচনে বিজয়ের পর উন্নত ঢাকা গড়ে তুলতে আমি যখন পরিকল্পনা সুনির্দিষ্ট করছিলাম, তখন সারাবিশ্বের মতো আমাদের পরিকল্পনায় বাধা হয়ে দাঁড়ায় করোনাভাইরাস। সারাবিশ্বে তখন এই করোনা মহামারি থেকে উত্তরণে এক ধরনের হতাশা ও আতঙ্ক বিরাজ করতে থাকে। এরই মধ্যে গত বছর ১৬ মে আমি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করি এবং করোনা মহামারির মধ্যেই আমাদের সামগ্রিক কার্যক্রম চালু করার প্রচেষ্টা নেয়।

তিনি আরও বলেন, আমাদের কর্মপরিকল্পনায় প্রথমেই আমরা জনগণের মৌলিক সেবা নিশ্চিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করি এবং করোনা মহামারির মধ্যেই যাতে নগরবাসীকে ডেঙ্গুর পীড়াদায়ক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে না হয় সেজন্য আমরা শুরু থেকেই মশক নিয়ন্ত্রণের ওপর সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছি এবং মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে নতুন করে ঢেলে সাজিয়েছি। আল্লাহর রহমতে আমরা সফলতা পেয়েছি। গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় কোনো প্রাণহানি হয়নি। এ বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে কিউলেক্স মশকের উপদ্রব কিছুটা বাড়লেও আমাদের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে আমরা দুই সপ্তাহের মধ্যেই কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছি। ফলে সিটি করপোরেশন মশক নিয়ন্ত্রণে যে সক্ষম সে বিষয়ে জনগণের মধ্যে আমরা আস্থা সঞ্চার করতে পেরেছি। আমরা আশাবাদী, গত মৌসুমের মতো এবারও আমরা ঢাকাবাসীকে ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে মুক্তি দিতে সক্ষম হব।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মাদ, করপোরেশনের স্থায়ী কমিটিগুলোর সভাপতি ও সদস্য, সিটি করপোরেশনের বিভাগীয় প্রধানরা।

এএসএস/জেডএস