ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ সালেহ ওয়াই রামাদান

বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদ করলেও মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলোর অবস্থান নিয়ে হতাশ ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ সালেহ ওয়াই রামাদান। বৃহস্পতিবার (২০ মে) ঢাকার ফিলিস্তিন দূতাবাসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ হতাশা প্রকাশ করেন।

ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে বিভক্তি খুব হতাশার। বিশেষ করে আরব বিশ্বের মধ্যে বিভক্তি আমাদের ক্ষতি করেছে, দুর্বল করে দিচ্ছে। যার কারণে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আমাদের অবস্থান দুর্বল।’

ফিলিস্তিনিদের সংগ্রামের প্রতি অব্যাহত সমর্থনের জন্য বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান রাষ্ট্রদূত রামাদান। তিনি বলেন, ‘তিন হাজার মাইল দূর থেকে বাংলাদেশ ফিলিস্তিনিদের বিভিন্নভাবে সাহায্য ও সহযোগিতা করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ বিশ্ব ও ইসরায়েলকে জানিয়ে দিয়েছে, ফিলিস্তিনিরা একা নয়। আমরা বাংলাদেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞ, প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। আমাদের দেশের জনগণও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞ।’

ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশি নাগরিকদের সহযোগিতা প্রসঙ্গে রামাদান বলেন, ‘আমি সাতদিন ধরে দেখছি, বাংলাদেশিরা সাহায্য করতে আমাদের ঢাকার দূতাবাসে আসছে। অনেকে বিভিন্ন কাজ ফেলে আমাদের এখানে আসছেন, আমাদের দেশের মানুষের জন্য সহমর্মিতা জানাতে।’

স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠায় দেশটির নাগরিকরা লড়াই ও সংগ্রাম চালিয়ে যাবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘অন্যদের দিকে না তাকিয়ে আমার দেশের জনগণ স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠায় লড়াই চালিয়ে যাবে। আমরা আমাদের সংগ্রাম চালিয়ে যাব। যারা আমাদের সঙ্গে যোগ দিতে চায়, তাদের স্বাগত, আর যারা আমাদের সঙ্গে থাকবে না, তাদেরও কিছু বলব না।’

‘ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা কখনোই আসবে না’ বক্তব্যে যোগ করেন রাষ্ট্রদূত রামাদান।

যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সমালোচনা করে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘তারা পৃথিবীতে মানবিক মূল্যবোধের রক্ষক হিসেবে নিজেদের দাবি করেন। কিন্তু ফিলিস্তিনিদের বিষয় এলে তারা মানুষের জীবন ও মানবিক মূল্যবোধ ভুলে যান। যুক্তরাষ্ট্রকে এই দ্বিচারিতা বন্ধ করতে হবে।’

বিশ্ব সম্প্রদায়ের উদ্দেশে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘ফিলিস্তিনের জনগণের ওপর আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে। ইসরায়েলিরা শিশু, নারী, বয়স্ক এমনকি প্রতিবন্ধীদের ওপর আক্রমণ করছে, এটি বন্ধ করতে হবে। বিশ্ব সম্প্রদায়কে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। তারা নিন্দা জানাচ্ছে, মিটিং করছে, কিন্তু এসব কোনো কাজে আসছে না। কারণ ইসরায়েল আন্তর্জাতিক দাবি বা আহ্বানকে গুরুত্ব দিচ্ছে না।’

এনআই/এমএইচএস