গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ইউএনজিএ প্রেসিডেন্ট ভলকান বজকিরের সৌজন্য সাক্ষাত

মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আলোচনায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বলার মতো কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (২৫ মে) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) প্রেসিডেন্ট ভলকান বজকিরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে তিনি একথা বলেন।
 
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাক্ষাৎ সম্পর্কে সাংবাদিকদের এ কথা জানান। ভলকান বজকিরকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নত দেশ হয়ে একটি উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশ এখন স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে গ্রাজুয়েশনের একটি দৃষ্টান্ত। বাংলাদেশের মানুষ খুব সাহসী। তারা এটা এগিয়ে নেবে। 

ইহসানুল করিম বলেন, উভয়ে আসন্ন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে, জলবায়ু পরিবর্তন, রোহিঙ্গা ও কোভিড-১৯ সহ নানা বিষয়ে কথা বলেন।ভলকান বজকির এক সংক্ষিপ্ত সফরে ঢাকা এসে পৌঁছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বেরও ভূয়সী প্রশংসা করেন।

তিনি বাংলাদেশের লিঙ্গ সমতা ও নারীর ক্ষমতায়নের প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশ একজন নারী প্রধানমন্ত্রী দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ দ্বারা অনুপ্রাণিত। কেননা তিনিই প্রথম সংসদে ১০ শতাংশ নারী কোটা বরাদ্দ করেন। আমরা সমাজের সর্বক্ষেত্র বিশেষ করে রাজনীতি ও প্রশাসনে নারীর ক্ষমতায়নে কেবল তার পদাঙ্কই অনুসরণ করছি। সংসদ নেতা, বিরোধীদলীয় নেতা, জাতীয় সংসদের স্পিকার ও সংসদ উপনেতা বর্তমানে একজন নারী।

ইউএনজিএ প্রেসিডেন্ট বলেন, সরকার প্রধানদের সশরীরে উপস্থিতির মাধ্যমে তারা এ বছরের সাধারণ অধিবেশন আয়োজনের চিন্তা-ভাবনা করছেন। আমরা এ বছর ইউএনজিএতে ওয়ান প্লাস ওয়ান পারসন প্রতিনিধিদল প্রতিটি দেশ থেকে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়ার কথা ভাবছি। ইউএনজিএ প্রেসিডেন্ট ১০ লাখের ওপর রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার সাহসী ভূমিকারও প্রশংসা করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত প্রায় ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গার পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। তারা বিষয়টি নিয়ে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। কিন্তু এ ব্যাপারে বলার মত কোনো অগ্রগতি হয়নি।

তিনি বলেন, আমরা অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছি। কিন্তু সাম্প্রতিক যা অগ্রগতি তাতে পরিস্থিতি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তার সরকার ভাসানচরে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গার আবাসনের ব্যবস্থা করেছে। যদিও ১৮ হাজার রোহিঙ্গা সেখানে স্বেচ্ছায় যেতে রাজি হয়েছেন।

কোভিড-১৯ পরিস্থিতি সম্পর্কে আগত অতিথিকে জানমাল রক্ষা ও অর্থনীতির ক্ষেত্রে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের বিস্তারিত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ চলাকালীন সোশাল সেফটি নেট কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। শেখ হাসিনা ’৭৫ এ জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর তিনি এবং তার বোন যে বৈরি পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলেন তাও তুলে ধরেন।

ইউএনজিএ প্রেসিডেন্ট আগামী বুধবার পাকিস্তানের উদ্দেশে দেশ ত্যাগের আগে বুধবার কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করবেন।

এইউএ/ওএফ