রাজধানীর চাঁনখারপুল এলাকা থেকে করোনা (কোভিড-১৯) টেস্ট রিপোর্ট চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ। সোমবার (৩১ মে) বিকেলে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. সাইফুর রহমান আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জালিয়াতি চক্রের গ্রেফতার সদস্যরা হলেন- মো. মনির হোসেন (৩৭) ও মো. রফিকুল ইসলাম ওরফে রুবেল (২৪)। অভিযানে তাদের কাছ থেকে একটি মনিটর, একটি প্রিন্টার, একটি সিপিইউ, একটি কি-বোর্ড ও দুটি নকল টেস্ট রিপোর্ট উদ্ধার করা হয়।

সাইফুর রহমান আজাদ বলেন, মনির হোসেন ও রফিকুল ইসলাম ওরফে রুবেল চাঁনখারপুল এলাকায় আল মেডিকেল ফার্মা নামে এমটি ফার্মেসি পরিচালনা করত। যেহেতু ফার্মেসি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের কাছাকাছি হওয়ায় অনেক দালালদের সঙ্গে তাদের পরিচয় ছিল। এসব দালালদের মাধ্যমে তারা গ্রামের সহজ-সরল মানুষদের করোনা টেস্টের নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার করানোর তাদের ফার্মেসিতে নিয়ে আসত। পরীক্ষা শেষে তাদের হাত ধরিয়ে দিত ভুয়া রিপোর্ট।

তিনি বলেন, সর্বশেষ ক্যান্সার আক্রান্ত একজন রোগীকে ঢামেকে হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করাতে আসলে চক্রটির কাছ থেকে কোভিড টেস্ট করায়। তারা সেই রোগীকে টেস্টের নেগেটিভ রিপোর্ট দেয় যা পরে ঢামেক হাসপাতালে ভুয়া রিপোর্ট হিসেবে ধরা পরে। পরে নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে রোববার অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা জানায়, ঢামেকে হাসপাতালে অস্ত্রোপচার জন্য আসা গ্রামের সহজ-সরল রোগীদের দালালদের মাধ্যমে কোভিড টেস্টের জন্য নিয়ে আসত। তাদের থেকে সংগ্রহ করা নমুনা পরীক্ষা ছাড়াই নিজেদের মতো নেগেটিভ ও পজিটিভ রিপোর্ট বানিয়ে দিয়ে দিত। কেউ নেগেটিভ রিপোর্ট চাইলেও তারা বানিয়ে দিত। প্রতি রিপোর্টে তারা দুই হাজার টাকা করে নিত।

মো. সাইফুর রহমান আজাদ বলেন, মনির হোসেন রাজধানীর একটি অখ্যাত ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সঙ্গে জড়িত। তারা মানুষের কাছ থেকে করোনার নমুনা সংগ্রহ করলেও এগুলোর কোনো পরীক্ষা করত না। তাদের সঙ্গে ঢামেক হাসপাতালের একটি দালাল চক্র জড়িত থাকতে পারে বলে আমরা সন্দেহ করছি। তাদের বংশাল থানায় দায়ের করা একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালতে তোলা হয়েছিল। আদালত তাদের দুই দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছেন। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ এই চক্রের বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে।

এমএসি/ওএফ