সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবি পূরণে সরকারকে আগামী ২০ জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। এর মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে ২৫ জুন বিকেল ৩টা থেকে শাহবাগে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

মঙ্গলবার (৮ জুন) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ৩৫-প্রত্যাশীদের অন্যতম সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি এই হুঁশিয়ারি দেয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান সাধারণ ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর সময়ের দাবি; এটা আন্দোলনের বিষয় নয়, অনুধাবনের বিষয়, উপলব্ধির বিষয়। এই উপলব্ধির বিষয়টি নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন আন্দোলন করে আসছি। আমাদের আন্দোলনের কারণেই মহামান্য রাষ্ট্রপতি ২০১২ সালের ৩১ শে জানুয়ারি মহান সংসদে ৭১ বিধিতে আলোচনার সময় বয়স ৩৫ বছরের কথা উল্লেখ করেন। স্বাধীনতার পর মহান জাতীয় সংসদে বয়সের বিষয়টি প্রায় ১০০ বারের মতো প্রস্তাব পেশ করা হয়। চার বার পয়েন্ট অব অর্ডার প্রস্তাব পেশ করা হয়। দেশের সব রাজনৈতিক দল তাদের নির্বাচনীয় ইশতেহারে এই কথা উল্লেখ করে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে অঙ্গীকার করা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় বর্তমান সরকার ৩ বছর অতিক্রম করার পরেও ছাত্রদের দেওয়া কথা, অঙ্গীকার এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন করেনি।

সময় নষ্টের ক্ষতিপূরণ রাষ্ট্রকে দিতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে করোনা মহামারির কারণে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ৭ কলেজ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের লাখ লাখ শিক্ষার্থী প্রায় আড়াই বছরের শেসনজটে পড়েছে, এখনও বিশ্ববিদ্যালয় খোলা প্রায় অনিশ্চিত। নন পিএসসির ক্ষেত্রে প্রজ্ঞাপনের শুরুর বয়স ১৮ বছর, ১৮ বছরে কখনও ৪ বছর মেয়াদি অনার্স শেষ হয় না, ২ বছর মেয়াদি ডিগ্রিও এখন নেই, এই অকার্যকর আইনটি এখনও বাতিল করা হয়নি। এমতাবস্থায় ছাত্রদের এই ঘাটতি পুষিয়ে দিতে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করা ছাড়া কোনো বিকল্প পথ নেই।

২০ জুন পর্যন্ত আল্টিমেটাম ঘোষণা করে তিনি বলেন, চাকরিতে প্রবেশর বয়স ৩০, এই গণ্ডি, দেয়াল, সীমানা প্রাচীর অবরুদ্ধ করে রেখেছে বাংলার লক্ষ কোটি ছাত্র সমাজকে। তারা আজ নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত, ছাত্রসমাজ আজ দিশেহারা কর্মহীনতার মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছে। আমরা আমাদের এই ন্যায্য দাবি, ন্যায্য অধিকার বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে ২০ জুন পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিলাম। এর মধ্যে যদি দাবি বাস্তবায়ন না হয় ২৫ জুন বিকেল ৩টা থেকে আমরা শাহবাগে লাগাতার অবস্থান করব, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে সংগঠনের সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুলতানা আক্তার, ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ নাসিম উপস্থিত ছিলেন।

এইচআর/জেডএস