ভুয়া ওয়ার্ক অর্ডারের মাধ্যমে ১৭৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এরশাদ ব্রাদার্স করপোরেশনের মালিক এরশাদ আলী এবং এবি ব্যাংকের সাবেক দুই এমডি শামীম আহমেদ ও মসিউর রহমানসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মঙ্গলবার (৮ জুন) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির উপ-সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

মামলার আসামিরা হলেন- এরশাদ ব্রাদার্স করপোরেশনের মালিক এরশাদ আলী, এবি ব্যাংকের সাবেক এমডি মসিউর রহমান চৌধুরী, সাবেক এমডি শামীম আহমেদ চৌধুরী, ইভিপি ও হেড অব সিআরএম ওয়াসিকা আফরোজী, ভিপি ও সিএমআরের সদস্য মুফতি মুস্তাফিজুর রহমান (স্বপন), সাবেক এসইভিপি ও হেড অব সিআরএম সালমা আক্তার, এভিপি ও সিআরএম সদস্য এমারত হোসেন ফকির, সাবেক প্রিন্সিপাল অফিসার তৌহিদুল ইসলাম, এসভিপি ও সিআরএমের সদস্য শামীম-এ-মোরশেদ, ভিপি ও সিআরএমের সদস্য খন্দকার রাশেদ আনোয়ার, এভিপি ও সিআরএমের সদস্য সিরাজুল ইসলাম, সাবেক ভিপি ও ক্রেডিট কমিটির সদস্য মাহফুজ-উল-ইসলাম। 

মামলায় আরও আসামি করা হয়েছে- এবি ব্যাংকের কাকরাইল শাখার ইসলামী ব্যাংকিং বিভাগের সাবেক ইভিপি ও শাখা ম্যানেজার এ.বি.এম আব্দুস সাত্তার, সাবেক এভিপি ও রিলেশনশিপ ম্যানেজার আব্দুর রহিম, বর্তমান এসভিপি ও সাবেক রিলেশনশিপ ম্যানেজার আনিসুর রহমান, ভিপি শহিদুল ইসলাম ও এভিপি রুহুল আমিনকে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, এরশাদ আলী এবি ব্যাংকের কাকরাইলের ইসলামী ব্যাংক শাখা থেকে পদ্মা রেলসেতু প্রকল্পে পাথর সরবরাহের ৬টি ওয়ার্ক অর্ডার দেখিয়ে ১৬৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা ঋণ নেন। কাকরাইলের এবি ব্যাংকের ইসলামী ব্যাংকিং শাখা থেকে ২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৬ ধাপে এ ঋণ নেয় এরশাদ আলীর প্রতিষ্ঠান। ওয়ার্ক অর্ডারসহ সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র কোনো রকম যাচাই-বাছাই ছাড়াই এ ঋণ দেওয়া হয়। অথচ ওয়ার্ক অর্ডারটি আমিনুল ইসলামের নামে ইস্যুকৃত। যিনি এরশাদ ব্রাদার্স করপোরেশনের স্বত্বাধিকারী নন।

প্রতিবেদন বলছে, বিশাল অঙ্কের এ ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে এবি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের তদারকির ঘাটতি ছিল। এছাড়া ২০১৭-১৮ সালে  ৭টি ব্যাংক গ্যারান্টি প্রস্তুত করে আরও ১০ কোটি টাকা উত্তোলন করে আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে।

রিকশাচালক থেকে ব্যবসায়ী বনে যাওয়া এরশাদ আলী চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হয়েছেন বলে অভিযোগ ছিল। ২০১৯ সালে এরশাদ আলীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামে দুদক। দুদক পরিচালক শেখ মোহাম্মদ ফানাফিল্লাহর নেতৃত্বে একটি টিমকে অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। অনুসন্ধানে নেমে পাঁচ প্রতিষ্ঠানের ৫০ জনের বেশি কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক।

আরএম/এনএফ/জেএস