বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস ক্যাডার কর্মকর্তাদের বুনিয়াদি এবং বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মানসম্মত প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এজন্য বাংলাদেশ লোক-প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (বিপিএটিসি) আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। লক্ষের চেয়েও বেশি অবকাঠামোগত সক্ষমতা বাড়ানো হবে বিপিএটিসি’র।  

সোমবার (১৪ জুন) পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের সর্বশেষ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ‘বিপিএটিসির প্রশিক্ষণ সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ’ প্রকল্পটি ১ম সংশোধন করা হয়েছে। সংশোধনের মাধ্যমে প্রকল্পটির দুই বছর মেয়াদ ও ৩৪৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ২০৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ লোক-প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (বিপিএটিসি)।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, প্রকল্পের মূল অঙ্গ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনের কাজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা, গণপূর্ত অধিদফতরের রেট শিডিউল ২০১৪-এর স্থলে বর্তমানে চলমান ২০১৮ সালের রেট শিডিউল অনুযায়ী পূর্তকাজের ব্যয় প্রাক্কলন সংশোধন করা, রেক্টর’স বাংলো নির্মাণ, সম্মুখ বাউন্ডারি ওয়াল, গেটের সিকিউরিটি সিস্টেম স্থাপন এবং ডরমিটরি ভবনে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বৃদ্ধি সম্পর্কিত পূর্ত ও বৈদ্যুতিক কাজ নতুন যোগ করা এবং প্রকল্পের উদ্দেশ্য অর্জনের লক্ষে প্রকল্পভুক্ত কার্যক্রম সুসম্পন্ন করার জন্য প্রকল্পের মেয়াদ ২ বছর অর্থাৎ জুন ২০২৩ পর্যন্ত বৃদ্ধি করার কারণেই প্রকল্পটি সংশোধন করা হয়েছে।

বিপিএটিসি’র কর্মকর্তারা বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের উন্নতমানের প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য বাংলাদেশের একটি সরকারি অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিপিএটিসি’র সামগ্রিক মান উন্নয়ন করা হবে। এছাড়া অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হলো দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য এর মানবসম্পদের বিকাশ এবং সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা। সরকারি কর্মকর্তাদের বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ প্রদান নিশ্চিত করতে সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান, বিপিএটিসি-এর অবকাঠামো ও প্রশিক্ষণ সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষে এই প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। 

বিপিএটিসি সূত্র জানায়, প্রকল্পটির বাস্তবায়ন জনপ্রশাসনে কর্মরত ক্যাডার কর্মকর্তাদের যথাসময়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে তাদের সার্বিক কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। যা অষ্টম পঞ্চবার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনার উদ্দেশ্য ও লক্ষের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। চলতি অর্থবছরের আরএডিপিতে এ প্রকল্পের অনুকূলে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে।

প্রকল্পের মাধ্যমে যা করা হবে

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ বিল্ডিং (২টি বেইজমেন্ট এবং ২০তলা ফাউন্ডেশন বিশিষ্ট ২০তলা ভবন) নির্মাণ, ডরমিটরি ভবন নির্মাণ (১টি বেইজমেন্ট এবং ১৫তলা ফাউন্ডেশন বিশিষ্ট ১৫তলা ভবন), ক্যাফেটেরিয়া ভবন নির্মাণ (৫তলা ফাউন্ডেশন বিশিষ্ট ৫তলা ভবন), মেডিকেল সেন্টার নির্মাণ (৪তলা ফাউন্ডেশন বিশিষ্ট ৪তলা ভবন), জগিং ট্রাক (২.২০ কিলোমিটার), সুসজ্জিত মেইন গেটসহ ২.২৫ কি.মি. বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ, পানি বিশুদ্ধকরণ ও সুপেয় পানীয় জলের সুবিধাদি স্থাপন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল নির্মাণ, স্যুয়ারেজ, ড্রেনেজ, স্যুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট এবং ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্লান্ট নির্মাণ,  বিপিএটিসি’র অভ্যন্তরে অবস্থিত লেকের সৌন্দর্যবর্ধন, লেকসাইড লাউঞ্জ নির্মাণ, উন্মুক্ত মঞ্চ এবং কফিকর্ণার নির্মাণ এবং আইসিটি সামগ্রী, আসবাবপত্র ও প্রশিক্ষণ সামগ্রীসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা হবে।

পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম বলেন, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস ক্যাডার কর্মকর্তারা বুনিয়াদি এবং বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের মানসম্মত প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। বিপিএটিসি’র অবকাঠামোগত সক্ষমতা বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। বর্তমানে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে প্রকল্পের ভৌত কাজের বাস্তবায়ন, হালনাগাদ রেট শিডিউল অনুসরণ করে ব্যয় প্রাক্কলন, নতুন পূর্ত ও বৈদ্যুতিক কাজের অন্তর্ভুক্তির প্রয়োজনে প্রকল্পটি প্রথম সংশোধন করা হয়েছে।

এসআর/এইচকে