ভুয়া দলিল তৈরি করে রাজধানীর গুলশানে সাড়ে ১১ কাঠা সরকারি প্লট দখলের অভিযোগে গুলশান সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সাবেক সাব-রেজিস্ট্রার মো. আবদুল আওয়াল ও দখলকারী তাসলিমা ইসলামের
বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) দুদকের কার্যালয় থেকে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন জানিয়েছেন। 

দুদক জানায়, ২০১৪ সালের ১৬ জুন গুলশান থানায় (মামলা নং-২০) দায়ের করা হয়। বাদী ছিলেন সরকারি আবাসন পরিদপ্তরের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মাসুদুল আলম। দুদকের মামলা তদন্ত করেন দুদকের উপপরিচালক মোজাম্মিল হোসেন।

তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, তৎকালীন পাকিস্তান আমলে ‘গুলশান মডেল টাউন’-এ অবস্থিত মামলা সংশ্লিষ্ট সিডাব্লিউএস(বি)- ৮৪, হোল্ডিং নং-১৮, রোড নং-২৩, গুলশান, ঢাকা ১১ কাঠা ৬ ছটাক আয়তন বিশিষ্ট একটি প্লটটি মো. আলী হোসেন, সাবেক সহকারী প্রকৌশলী, ডিআইটিকে লীজ দলিলে বরাদ্দ প্রদান করা হয়। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৬৬ সালে পাকিস্তান আমলে বরাদ্দ পান আনিসুল ফাতেমা। ১৯৭১ সালে দেশত্যাগ করলে প্লটটি ‘পরিত্যক্ত সম্পত্তি’ হিসেবে সরকারি নিয়ন্ত্রণে আসে। ১৯৮৬ সালের গেজেটে এটি ‘ক’ তালিকাভুক্ত সম্পত্তি হিসেবে প্রকাশিত হয়। প্লটটির মূল মালিক দেশত্যাগ করেছেন তা জেনেও আসামি তাসলিমা ইসলাম একটি অস্তিত্বহীন নারীকে আনিসুল ফাতেমা সাজিয়ে ভুয়া দলিল তৈরি করেন। উদ্দেশ্য ছিল প্লটটি নিজের দখলে নেওয়া।

তদন্তে দেখা যায়, তাসলিমা ইসলাম ও সাবেক সাব-রেজিস্ট্রার আবদুল আওয়াল পরস্পর যোগসাজশে অপ্রত্যাহারযোগ্য সাধারণ আমমোক্তারনামা তৈরি করেন। দলিলে উল্লেখ করা ঠিকানা ‘৩২, হাটখোলা রোড, ঢাকা’ ভুয়া প্রমাণিত হয়। দলিলের সাক্ষীরাও ছিল কল্পিত ও অস্তিত্বহীন। অর্থাৎ আইনগত ভিত্তি না থাকা সত্ত্বেও দলিলটি তৈরি করা হয়। আসামিরা ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রতারণা, জাল দলিল সৃষ্টি ও সরকারি সম্পত্তি আত্মসাতের প্রচেষ্টায় জড়িত। যে কারণে তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ১৬৭/২১৭/২১৮/১০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৫১১ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭–এর ৫(২) ধারায় চার্জশিট অনুমোদন হয়েছে।

আরএম/এমএন