২০২১-২২ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে শ্রমজীবী মানুষের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস)।

এছাড়া শ্রমজীবী মানুষের একটি পূর্ণাঙ্গ ডাটাবেইজ তৈরির জন্য সুনির্দিষ্ট বাজেট পরিকল্পনা ও প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দসহ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ মহার্ঘ্যভাতা প্রদানের ব্যবস্থা, একটি সার্বজনীন পেনশন স্কিম প্রণয়ন, শ্রমিকের পুনঃকর্মসংস্থান এবং শ্রমিকদের টিকা দেওয়ার জন্য একটি সম্পূর্ণ পরিকল্পনা গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন বক্তারা।

সোমবার (২৮ জুন) বিলস সেমিনার হলে এবং ভার্চুয়ালি ‘২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটের উপর বিলসের সুপারিশমালা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানানো হয়।

বিলসের উপপরিচালক (গবেষণা) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, করোনাকালে শ্রমিক ও শ্রমজীবী মানুষের জন্য বিভিন্ন দাবি থাকলেও প্রস্তাবিত বাজেটে তা উপেক্ষিত রয়েছে। বর্তমানে কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউ সর্বোচ্চ পর্যায়ে। অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক উভয় ধরনের চলাচলে বিধিনিষেধ রয়েছে। ইতোমধ্যে ১ লাখ ২৮ হাজার ৪৪১ কোটি টাকার ২৩টি পুনরুদ্ধার প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে, যা জিডিপির প্রায় ৪.২ শতাংশ।

তিনি বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬.১ শতাংশ। তারপরও কোভিডের কারণে শ্রমিকের আয় কমেছে। অনেক শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন। তারা সঞ্চিত অর্থ ব্যয় করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করছেন। অনেক শ্রমিক চাকরি নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। অন্যদিকে বিদেশে শ্রম অভিবাসনও উল্লেখযোগ্য হারে কমে বছরে মাত্র ২ লাখ জনে দাঁড়িয়েছে, বিগত বছরগুলোয় যা ছিল প্রায় ৮ লাখ জন। এর মধ্যে কোভিডের কারণে বিগত কয়েক মাসে অনেক অভিবাসী শ্রমিক দেশে ফিরেছেন।

বিলস মহাসচিব ও নির্বাহী পরিচালক নজরুল ইসলাম খান বলেন, কোভিডের কারণে চাকরি হারিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের বহু শ্রমিক বেকার হয়েছেন, তাদের সহায়তায় সামাজিক সুরক্ষাসহ অন্যান্য বিষয়গুলো বাজেটে থাকা উচিত। প্রস্তাবিত বাজেটে কর্মসংস্থানের নিরাপত্তা, উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান, শ্রমিকের সামাজিক নিরাপত্তাসহ বাজেট প্রক্রিয়ায় শ্রমিক প্রতিনিধির অংশগ্রহণের বিষয়টি উপেক্ষিত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, যেসব অভিবাসী শ্রমিক দেশে ফেরত এসেছেন তাদের কর্মসংস্থান বিষয়েও বাজেটে কোনো দিকনির্দেশনা নেই। যতদিন পর্যন্ত তারা কাজে যোগদান করতে না পারছেন তাদের সরকারিভাবে সহায়তা দেওয়া উচিত এবং তাদের জন্য নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে দক্ষতা উন্নয়নের বিষয়টিতে আরও গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

সভাপতির বক্তব্যে বিলস উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য নইমুল আহসান জুয়েল বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট শ্রমিকবান্ধব নয়, এটি ব্যবসাবান্ধব বাজেট। তারপরও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য বাজেটে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা ও বরাদ্দ নেই।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন সভাপতি কামরূল আহসান, বিলস সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, পরিচালক কোহিনূর মাহমুদ, নাজমা ইয়াসমীন, উপ-পরিচালক মো. ইউসুফ আল মামুন প্রমুখ।

এএসএস/এসকেডি