লকডাউনে সড়কে নেই গণপরিবহন, রিকশার দাপট

লকডাউন ও বৃষ্টিকে ইস্যু করে রাজধানীতে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছেন রিকশাচালকরা। প্রধান প্রধান সড়কে ৬০ থেকে ৮০ টাকার ভাড়া নিচ্ছেন ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। আর অলি-গলিতে ১০ টাকার ভাড়া নিচ্ছেন ৩০ টাকা। তাতেও খুশি নন তারা। তাদের দাবি, লোকজনের চলাফেরা কমেছে, তাই আয়ও কমেছে।

শুক্রবার (২ জুলাই) রাজধানীর কুড়িল, বসুন্ধরা, নতুন বাজার, বাড্ডা, রামপুরা ও মালিবাগ এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে গণপরিবহন নেই। আর তাই সড়কে রিকশার দাপট। অতি প্রয়োজনে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে রিকশার কোনো বিকল্প নেই। এ সুযোগে রিকশাচালকরা নিজেদের ইচ্ছেমতো ভাড়া দাবি করছেন। 

রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে গুলশান-১ নম্বরে আসা রিংকু মন্ডল বলেন, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে গুলশান-১ গোল চত্বর পর্যন্ত ভাড়া ৭০ থেকে ৮০ টাকা। কিন্তু আমাকে গুনতে হয়েছে দ্বিগুণ ভাড়া। আমি গুলশান এসেছি ১৪০ টাকা দিয়ে।

রিকশাচালক রিদুয়ানুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, লকডাউনে ইনকাম (আয়) মোটামুটি হচ্ছে। দিনে পাঁচ থেকে ছয়শ টাকা থাকে। আরেক রিকশাচালক নূর মিয়া বলেন, ছয় বছর ধরে ঢাকায় রিকশা চালাই। লকডাউনের কারণে আজ ইনকাম কম হয়েছে। এখন পর্যন্ত তিনশ টাকা হয়েছে। বৃষ্টির কারণে রাস্তায় লোকজন কম।

রিকশাচালক খোকন মিয়া দাবি করেন যে, তিনি অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছেন না। তিনি বলেন, মধ্যবাড্ডা মোড় থেকে পুলিশ প্লাজা মোড় পর্যন্ত রিকশা ভাড়া ২০ টাকা। আমি বেশি নিচ্ছি না। তবে কেউ বৃষ্টির কারণে খুশি হয়ে বেশি দিলে নিই।

তিনি আরও বলেন, লকডাউনের কারণে অটোরিকশা চালানো বন্ধ হয়ে গেছে। তাই রিকশা চালাচ্ছি। দিনে ছয় থেকে সাতশ টাকা ইনকাম হয়। আরও বেশি হতো। কিন্তু বৃষ্টির কারণে মানুষ বাইরে কম বের হচ্ছেন। খাওয়া-দাওয়া শেষে শ পাঁচেক টাকা থাকে।

বড় ভাইয়ের জ্বর শুনে বসুন্ধরা থেকে পল্টন যাচ্ছেন কুমিল্লার রিমন হাওলাদার। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভাই অসুস্থ, তাই বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছি। পথে পুলিশ তিন দফা জিজ্ঞাসাবাদ করছে। দেড়শ টাকার রিকশা ভাড়া সাড়ে তিনশ টাকা দিয়েছি।

পূর্ব বাড্ডার পাঁচতলা কাঁচাবাজার থেকে মধ্যবাড্ডা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত একজনের রিকশা ভাড়া ১০ টাকা। দুজন হলে ২০ টাকা। কিন্তু বৃষ্টির কারণে একজনকে পাঁচতলা কাঁচাবাজারে যেতে হলে গুনতে হচ্ছে ৩০ টাকা। একটু বেশি দূর গেলে ৪০ থেকে ৫০ টাকা গুনতে হচ্ছে। অর্থাৎ ১০ থেকে ১৫ টাকার ভাড়া এখন দিতে হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০টাকা।  

এ সড়কের রিকশাচালক খুরশিদ সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, যাওয়ার ভাড়া ২০ টাকা। বৃষ্টির কারণে এখন ৩০ টাকা নিচ্ছি। লোক নেই, ইনকামও নেই। এ সড়কে ৪০-৫০টি রিকশা চলে। এখন ২০-২৫টি রিকশা চলছে, বাকিগুলো বন্ধ।   

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ২৮ জুন থেকে সারাদেশে লকডাউন শুরু হয়েছে। ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক লকডাউন চলছে রাজধানীসহ সারাদেশে। লকডাউনে অফিস আদালত বন্ধ রয়েছে। তবে সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা রয়েছে। এছাড়াও পোশাক কারখানার পাশাপাশি ব্যাংক ও পুঁজিবাজার খোলা রয়েছে।  

এমআই/আরএইচ