শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগে আটক দুজন

রাজধানীর তোপখানা রোডে শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগে গৃহকর্তা তান‌ভির আহসান ও তার স্ত্রী অ্যাড‌ভো‌কেট না‌হিদকে শনিবার (৩ জুলাই) রাতে আটক করেছে পুলিশ। ওই ঘটনায় অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে তোপখানা রোড এলাকাবাসী। রোববার (৪ জুলাই) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সামনে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধন এলাকাবাসীরা বলেন, নির্যাতনের ফলে সুইটি কয়েক দিন আগে পালিয়ে রিপোর্টার্স ইউনিটির সামনে এসেছিল। সেখান থেকে তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এরপর থেকে মেয়েটার ওপর অত্যাচার বেশি বেড়েছে। আমাদের ধারণা, অভিযুক্তরা থাকে পাঁচ তলায়। তাদের বাবা-মা থাকে দোতলায়। অভিযুক্তের একটা ভাই আছে ২৪/২৫ বছর বয়সের। সেটাকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ওই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে গেছে। বিচার করবে আদালত। আমরা চাই এই ঘটনায় অভিযুক্তদের যেন কঠিন শাস্তি দেওয়া হয়।

পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মি‌ডিয়া অ্যান্ড পাব‌লিক রি‌লেশন্স) মো. সোহেল রানার দেওয়া তথ্যে জানা যায়, নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মীর নাম সুইটি (১২)। তার বাড়ি কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার নবাবপুর থানায়।

মো. সোহেল রানা বলেন, অভাবের তাড়নায় দরিদ্র বাবা-মা সুইটিকে রাজধানীর তোপখানা রো‌ডের এক বাসায় গৃহকর্মীর কাজে দিয়েছিলেন। এখানে সে ৯ মাস ধরে কাজ করছে। প্রায় প্রতিদিনই তাকে নানা অজুহাতে গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রী উভয়ই মারধর করতেন। একপর্যায়ে শনিবার (৩ জুলাই) মেয়েটিকে নির্যাতনে আঘাতের চিহ্নসহ কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন এক প্রতিবেশী। ছবিগুলো পোস্ট দিয়ে তিনি দ্রুত সহযোগিতা ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান।

তিনি বলেন, ছবিতে মেয়েটির চোখের নিচে আঘাতের চিহ্ন ও হাতে গুরুতর জখম। অপর এক ছবিতে মেয়েটির পশ্চাৎ দেশে উভয়পাশে আগুনে পোড়া ঘা চোখে পড়ে। এই পোস্টটি একজন গণমাধ্যমকর্মী পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংকে পাঠিয়ে দ্রুত সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। ঘটনাস্থল কোন থানার অধীনে তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত না হওয়ায় মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গেই রমনা থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম ও শাহবাগ থানার ওসি মওদুত হাওলাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ‌ বিষ‌য়ে দ্রুত ব্যবস্থা নি‌তে নি‌র্দেশনা দেয়।

তিনি আরও বলেন, উভয় থানা থেকেই দ্রুতগতিতে ঘটনাস্থলের দিকে একটি করে টিম ছুটে যায়। পরবর্তীতে জানা যায়, ঘটনাস্থলটি শাহবাগ থানার অধীনে। এরপর শাহবাগ থানার একটি টিম মেয়েটিকে উদ্ধার করে। এ সময় নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্তদের আটক করে।

মো. সোহেল রানা বলেন, ফেসবুকে দেওয়া পোস্টের মাত্র দেড় ঘণ্টার মধ্যে ও পুলিশের নজরে আসার মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে ভিকটিমকে উদ্ধার ও অভিযুক্তদের আটক করা হয়েছে। অভিযুক্ত‌দের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এমএইচএন/ওএফ