চমেকে আড়াই বছরের শিশুর বিরল রোগের সফল অস্ত্রোপচার
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) অপারেশন করে দুই বছর সাত মাস বয়সী এক শিশুর শরীরের ভেতর থেকে প্রায় দুই কেজি ওজনের একটি মাংসপিণ্ড বের করা হয়েছে। চিকিৎসকদের ভাষায় যাকে, ‘ফিটাস ইন ফেটু’ বলা হয়।
বুধবার (৭ জুলাই) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের শিশু সার্জারি বিভাগে অপরাশেনটি করা হয়। শিশুটির অস্ত্রোপচার করেন চমেকের শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল্লাহ আল ফারুক, সহযোগী অধ্যাপক ডা. রাজীব খাস্তগির ও সহকারী অধ্যাপক ডা. এম এ মুশফিকুর রহমান।
বিজ্ঞাপন
চমেকের শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল্লাহ আল ফারুক ঢাকা পোস্টকে বলেন, এই ধরনের রোগী খুবই বিরল। গত চার বছরে চট্টগ্রাম মেডিকেলে এ নিয়ে এমন দুইটি অপারেশন হয়েছে। অপারেশন করে শিশুটির পেটের ভেতরে থাকা অংশটি বের করা হয়েছে। বর্তমানে শিশুটি ভালো আছে। সব ঠিক থাকলে আশা করছি এক সপ্তাহ পর সে বাড়ি যেতে পারবে।
২০১৯ সালে জন্ম নেওয়া শিশু মুরসালিনের বাড়ি সিলেটের হবিগঞ্জে। তার বাবা মো. জুনাইদ হোসাইন চট্টগ্রামে রিকশা চালান।
বিজ্ঞাপন
জুনাইদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, জন্মের পর থেকেই পেট ফুলে থাকত মুরসালিনের। যতই দিন যাচ্ছিল পেট বড় হচ্ছিল। সেই সঙ্গে তার পেট ব্যথা হত। ব্যথা বেড়ে যাওয়ায় গত ২৯ মে মুরসালিনকে চমেকে নিয়ে আসা হয়। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। চিকিৎসকরা প্রথমে জানান, শিশুটির পেটের ভেতর বড় আকারের টিউমার আছে। কিন্তু পরে দেখা যায় পেটে অদ্ভুত এক মাংসপিণ্ড।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, চিকিৎসা শাস্ত্রের ভাষায় শিশুটির সমস্যাকে বলা হয়, ফিটাস ইন ফিটু। আর ফিটাস ইন ফিটু মানে মায়ের পেটে যমজ বাচ্চা জন্ম নিয়েছে। কিন্তু পরে একটি বাচ্চার পরিপূর্ণ গঠন ও বিকাশ হলেও আরেকটি বাচ্চা পুরোপুরি বেড়ে ওঠেনি। যে বাচ্চাটির গঠন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সেই বাচ্চাটি আম্বিলিকাল কর্ডের মাধ্যমে পুরোপুরি বেড়ে ওঠা বাচ্চাটির শরীরের ভেতর চলে যায়। কিন্তু এর বিকাশ বা গঠন সেখানেই থেমে থাকে।
ডা. মো. আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, শিশুটির পেট থেকে টিউমারের মতো যে মাংসপিণ্ডটি ছিল, সেটি বের করা হয়েছে। এটি পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হবে।
তিনি আরও বলেন, করোনা মহামারির সময় এমন একটি জটিল অপারেশনের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন চমেকের পরিচালক। তার প্রচেষ্টায় আমরা সফলভাবে অপারেশনটি শেষ করতে সক্ষম হয়েছি।
কেএম/এমএইচএস