ফের ভরসা রিকশা
রাজধানীর বনশ্রী এলাকার বাসিন্দা আহমেদ মিলন। মতিঝিলের বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। বিধিনিষেধেও প্রায় নিয়মিত অফিস করতে হয়। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় রিকশায় করেই অফিস যেতে হয় তাকে। কঠোর বিধিনিষেধে অফিসে যেতে তার একমাত্র ভরসা রিকশা। যদিও ভাড়া গুনতে হচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ।
রোববার (১ আগস্ট) হঠাৎ কিছু সময়ের জন্য বাস চলায় স্বস্তিতে ছিলেন। সোমবার (২ আগস্ট) আবার সেই রিকশাতেই চেপেই অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে অফিসে যেতে হচ্ছে। স্বল্প বেতনের কর্মী মিলন বলেন, কি বলব ভাই। ছোট চাকরি করি। সরকারের বিধিনিষেধে কি আমাদের ঘরে বসে থাকার সুযোগ আছে। একদিকে করোনার ভয়, অন্যদিকে অফিসে যেতে নিয়মিত ভোগান্তি। বেতন যা পাই, পথে পথেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। খরচ কমাতে অফিস থেকে ফেরার পথে হেঁটে বাসায় যাই। তারপরও জীবনের অংক মেলাতে পারছি না।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, মতিঝিলে যেতে ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় রিকশা ভাড়া গুনতে হয়। কখনও ভ্যানে করে তুলনামূলক কম ভাড়ায় অফিসে গিয়েছি। প্রথম প্রথম অফিসে রোস্টার সিস্টেম চালু ছিল। এখন স্বাভাবিক নিয়মে চলছে।
বিজ্ঞাপন
কারখানার শ্রমিকদের ঢাকায় ফেরায় সুবিধার্থে বিধিনিষেধের মধ্যে হঠাৎ শনিবার রাত থেকে ১৬ ঘণ্টার জন্য গণপরিবহন চালুর সিদ্ধান্ত জানায় সরকার। এ খবরে সারাদেশ থেকে মানুষ আসতে শুরু করে ঢাকায়। কিন্তু দুপুরের দিকে ঢাকায় গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়ায় গ্রাম থেকে আসা লোকজন ফের ভোগান্তিতে পড়ে।
সোমবার রাজধানীর রামপুরা, মৌচাক ও খিলগাঁও এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সকাল ৭টা থেকেই রিকশা, ভ্যান কিংবা ভাড়ায় চালিত সিএনজি ও মাইক্রোবাসে করে গার্মেন্টসহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছেন কর্মীরা। অনেকে আবার বাধ্য হয়ে পায়ে হেঁটেও যাচ্ছেন গন্তব্যে।
হেঁটে অফিসে যাওয়া সগির হোসেন বলেন, রিকশায় চড়তে আর্থিক সামর্থ্যের পরীক্ষা দিতে হয় ভাই। হঠাৎ গার্মেন্ট খুলে যাওয়ায় গতকাল (রোববার) অনেক কষ্টে ঢাকা এসেছি। পদে পদে বাড়তি ভাড়া দিতে গিয়ে পকেট ফাঁকা। তাই আর সাহস করে রিকশায় উঠিনি। নতুন বাজার থেকে এসেছি। যাব মালিবাগে। হাতে সময় নিয়ে বেরিয়েছি। হেঁটেই অফিসে যাব আজ। কিছু করার নেই।
বাড়তি ভাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রিকশা চালক হাকিম মিয়া বলেন, আপনারা রাস্তায় খালি রিকশা দেখেন। অনেক অফিস ও স্কুল-কলেজ যে বন্ধা সেটা দেখেন না। রাস্তায় যারা বের হন, সবাই রিকশায় ওঠেন না। বেশি ভাড়া সব সময় দিতে হয় না। যাত্রী কি আগের মতো আছে এখন?
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণে সরকার ৫ আগস্ট পর্যন্ত নানা ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ দিয়ে রেখেছে। সে অনুযায়ী সব কারখানাগুলো বন্ধ থাকার কথা ছিল। তবে ঈদের পর থেকেই কারখানা খোলার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিলেন শিল্প-কারখানার মালিকরা। ওই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রোববার থেকে গার্মেন্টসহ রফতানিমুখী শিল্পকারখানা স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলার অনুমতি দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
আরএম/এসএসএইচ