সংগৃহীত ছবি

কৃষিজমিতে ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার বেড়েছে। এছাড়া সেচ এলাকার পাশাপাশি সেচ দক্ষতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে ৭৩ ভাগ জমিতে সেচ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।

ভূগর্ভস্থ পানি পর্বেক্ষণের পর্যালোচনায় এতথ্য উঠে এসেছে। ক্ষুদ্রসেচ উন্নয়নে জরিপ ও পরিবীক্ষণ ডিজিটালাইজেশন প্রকল্পের আওতায় তথ্য সংগ্রহের কাজটি পরিচালনা করা হয়।

• বর্তমানে সেচ এলাকা ৫৬ দশমিক ২৭ লাখ হেক্টর।
• গত ১০ বছরে সেচ এলাকা সম্প্রসারণ হয়েছে সাড়ে ১০ লাখ হেক্টর।
• ২০৩০ সাল নাগাদ ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার ৭০ ভাগ কমিয়ে আনা হবে।

প্রকল্প পরিচালক মো. জাফর উল্লাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, বর্তমানে সেচ এলাকা ৫৬ দশমিক ২৭ লাখ হেক্টর। আর সেচ দক্ষতা ৩৫ ভাগ হতে ৩৮ ভাগে এবং ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার ২১ ভাগ থেকে ২৭ ভাগে দাঁড়িয়েছে। সব মিলিয়ে সেচযোগ্য জমির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৩ ভাগ।

কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, পানির টেকসই ব্যবহার ও পানিসম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার বাড়াতে সরকার অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়ায় এ সফলতা দেখা দিয়েছে।

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) দেওয়া তথ্যে দেখা যায়, গত ১০ বছরে সেচ এলাকা সম্প্রসারণ হয়েছে সাড়ে ১০ লাখ হেক্টর। খাল পুন:খনন হয়েছে ৯ হাজার ৪৫৭ কি.মি.। সেচনালা স্থাপন হয়েছে ১৩ হাজার ৩৫১ কি.মি.। পাশাপাশি ১০টি রাবার ড্যাম ও ১টি হাইড্রোলিক এলিভেটর  ড্যাম নির্মাণে এখন বেশ সুফল মিলছে।

ভবিষ্যত পরিকল্পনার হিসেবে জানানো হয়, আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সেচকৃত এলাকা ৬০ লাখ হেক্টর, সেচ দক্ষতা ৫০ ভাগ, সেচকাজে ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার ৩০ ভাগ বাড়ানোর পাশাপাশি ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার ৭০ ভাগ কমিয়ে আনা হবে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) ড. মো. আব্দুর রউফ জানান, ভবিষ্যতে আমাদের ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার বাড়াতে হবে। এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। 

মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা জানান, নদী-খাল খনন ও পুন:খনন, রাবার ড্যাম, জলাধার নির্মাণ, পানি সাশ্রয়ী পদ্ধতির ব্যবহারসহ অনেক উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এর ফলে ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে।

এর সুবিধা হিসেবে ফসল উৎপাদনে সেচের খরচ অনেক কমেছে। তবে খরচটি আরও কমিয়ে আনার বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ণ করছে কৃষি মন্ত্রণালয়। লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে, সেচ দক্ষতাকে ৩৮ ভাগ থেকে ৫০ ভাগে নিয়ে যাওয়ার জন্যে ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহারকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে পানির টেকসই ব্যবহার ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য ১৯৬৭ থেকে ৬৮ সালে বিএডিসি প্রাথমিক পর্যায়ে গ্যাজের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর পরিমাপ কার্যক্রম শুরু করে।

প্রতিটি উপজেলায় ১টি করে ওয়াটার লেভেল ডাটা লগার স্থাপন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ পানির অবস্থানচিত্র তৈরি এবং সময়ে সময়ে তা হালনাগাদ করা সম্ভব হচ্ছে।

এছাড়াও স্পেস টেকনোলজি ও রিমোর্ট সেন্সিং-এর মাধ্যমে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ, তথ্য সংগ্রহ এবং জিআইএস-এর মাধ্যমে বিশ্লেষণ করে পানির স্তরের হালনাগাদ তথ্য দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়াও সমুদ্র উপকূলবর্তী ৬০টি উপজেলায় স্যালাইনিটি ডাটা লগার স্থাপনের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ লবণ পানি পর্যবেক্ষণ এবং অনুপ্রবেশ মনিটরিংয়ের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

একে/এইচকে