পরিবেশবাদীদের কথা সরকারের কাছে নিষ্ফল লম্ফ-জম্ফ মনে হয়, যা অত্যন্ত দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সভাপতি সুলতানা কামাল।

তিনি বলেছেন, আমরা দেশের স্বার্থে, সাধারণ জনগণের স্বার্থে পরিবেশ ধ্বংসের বিরুদ্ধে কথা বলি। দেশের পরিবেশ ঠিক না থাকার কারণে আজ বিভিন্ন রোগ-বালাই বেড়েই চলেছে। জলবায়ু পরিবর্তন এবং জনসচেতনতার মধ্যে সমন্বয় না থাকলে ডেঙ্গু থেকে বাঁচা দুঃসাধ্য।

শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) অনলাইনে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) আয়োজিত ‘পরিবেশ ও ডেঙ্গু : স্বাস্থ্যগত দৃষ্টিকোণ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, গভর্নেন্স না থাকলে কোনো আলোচনা ফলপ্রসূ হয় না। দায়িত্ব ও অধিকার বোধের মধ্যে সমন্বয় আজ জরুরি। এটির অভাব দেখা দিলে সমাজে এ ধরনের রোগ বালাই থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে না। নগরায়ণ করতে গিয়ে আমরা প্রকৃতিকে কতটা সমুন্নত রাখছি সেটি লক্ষণীয়। সাধারণ মানুষকে দেশের কল্যাণমূলক কাজে বেশি সম্পৃক্ত করতে হবে। সিভিল সোসাইটি বলতে এখন আর কিছুই নেই; কারণ কথা বলতে গেলেই বিভিন্ন ধরনের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। যারা এ ডেঙ্গু প্রতিরোধ কর্ম প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদের নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। ওয়ার্ড কমিশনারদের নিয়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধে আলোচনা করা জরুরি।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা ও রোগ নিয়ন্ত্রণের সাবেক পরিচালক এবং বাপার পরিবেশ ও স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিটির আহ্বায়ক ড. আবু মোহাম্মাদ জাকির হোসেন বলেন, যার মধ্যেই জীবন আছে তাপ তাদের কার্যক্রমকে বাড়াতে পারে এবং কমাতে পারে। আমরা জানি ডেঙ্গুর সুপ্তিকাল ৮-১০ দিন। ১০০ জনের মধ্যে ভাইরাস গেলে তাদের ৫৪ জনের মধ্যে ডেঙ্গুর উপসর্গ প্রকাশ পাবে না। ডেঙ্গু হলে উচ্চমাত্রায় জ্বর হবে, চোখের পেছনে, মাথায় ও হাড়ের সন্ধিগুলোতে প্রচণ্ড ব্যথার সৃষ্টি হবে। গ্লান্ডগুলো ফুলে যেতে পারে। দ্বিতীয়বার অন্য একটি সিরোটাইপ দিয়ে ডেঙ্গু হলে তার ফলে হেমোরেজিক জ্বর বা শক সিন্ড্রোম হতে পারে এবং এর ফলে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অর্গানগুলো থেকে প্লাজমা বের হয়ে যায়। দ্বিতীয়বার অন্য টাইপ দিয়ে ডেঙ্গু হলেই এরকম ভয়ানক অবস্থার সৃষ্টি হয়।

বাপা পরিবেশ ও স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিটির সদস্য সচিব বিধান চন্দ্র পাল বলেন, বৃষ্টিপাত, তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা এ তিনটা এডিস মশার বংশবৃদ্ধির জন্য সহায়ক। ফলে যে সব কারণে তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা পরিবর্তিত হচ্ছে সে কর্মকাণ্ড থেকে দূরে সরে আসতে হবে কিংবা আমাদের নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। ডেঙ্গুতে যদিও সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন ঢাকা শহরের বাসিন্দারা। কিন্তু সারাদেশেই ডেঙ্গু রোগের সংক্রমণ রয়েছে। কারণ সারাদেশই এখন শহর থেকে বড় শহর, বড় শহর থেকে মেগাসিটি হয়ে ওঠার প্রক্রিয়ায় লিপ্ত।

আলোচনায় আরও যুক্ত ছিলেন বাপার নির্বাহী সহ-সভাপতি ডা. আব্দুল মতিন, বাপার সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল, নির্বাহী সদস্য তোফাজ্জল আলী, যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর কবির, বাপার নদী ও জলাশয় বিষয়ক কমিটির সদস্য সচিব ড. হালিম দাদ খান প্রমুখ।  

এমএইচএন/এসএম