অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত নই, দাবি সুকুমার মৃধার
আদালতের উদ্দেশে সুকুমার মৃধা ও তার মেয়ে
পি কে হালদারের কোনো ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই, তিনি কেবল ক্লায়েন্ট। এমনটাই দাবি করেছেন গ্রেপ্তার হওয়া পি কে হালদারের ইনকাম ট্যাক্স আইনজীবী ও সুকুমার অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের মালিক সুকুমার মৃধা।
বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) সকাল থেকে রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ে সুকুমার মৃধা ও তার মেয়ে উইন্টেল ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক অনিন্দিতা মৃধাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
বিজ্ঞাপন
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুপুর সোয়া ১টায় অনুসন্ধান কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাউদ্দিন তাদের গ্রেপ্তার দেখান।
দুদকের জনসংযোগ (পরিচালক) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তারের পর দুপুর সোয়া ২টার দিকে অনুসন্ধান কর্মকর্তা সালাউদ্দিন তাদেরকে নিয়ে আদালতের উদ্দেশে রওনা হন।
বিজ্ঞাপন
দুদক থেকে আদালতে নেওয়ার সময় সুকুমার মৃধা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘পত্রপত্রিকায় যা লেখালেখি হচ্ছে সেই বিষয়ে পি কে হালদারের কোনো ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই। তিনি কেবল আমার ক্লায়েন্ট।’
আদালতে নেওয়ার পর সুকুমার মৃধা ও তার মেয়ে অনিন্দিতা মৃধাকে তিন দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এদিন দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে তাদের ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে হাজির করা হয়।
এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি পি কে হালদারের আরেক সহযোগী অবন্তিকা বড়ালকে গ্রেপ্তার করেছে দুদক। মামলার তদন্তে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় এর আগে গত ৪ জানুয়ারি পি কে হালদারের আরেক ঘনিষ্ঠ সহযোগী শংখ ব্যাপারীকেও গ্রেপ্তার করা হয়। শংখ ব্যাপারীর নামে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় একটি বিলাস বহুল ফ্ল্যাটের সন্ধান পাওয়া যায়, যা পি কে হালদারের অর্থায়নে কেনা হয়েছে বলে দুদকের এক কর্মকর্তা জানান।
অভিযোগ রয়েছে পি কে হালদার ওই প্রতিষ্ঠানসহ পিপলস লিজিং ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানির (বিআইএফসি) দায়িত্ব পালন করে প্রায় ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচার করেছেন।
ক্যাসিনো অভিযানের ধারাবাহিকতায় তার বিরুদ্ধে এরই মধ্যে প্রায় ২৭৫ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে দুদক। ক্যাসিনোবিরোধী শুদ্ধি অভিযানের পরপরই প্রশান্ত কুমার হালদারের নাম উঠে আসে। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ২০২০ সালের ১৪ নভেম্বর হাজির হতে নোটিশ দিয়েছিল সংস্থাটি।
৩ অক্টোবর পি কে হালদারের বিদেশযাত্রায়ও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি ঠিকই দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন। পরে দেশে আসার কথা বলেও আর আসেননি। এরই মধ্যে ৮ জানুয়ারি দুদকের অনুরোধে গ্রেপ্তার পরোয়ানা দিয়ে রেড এলার্ট জারি করেছে ইন্টারপোল।
এদিকে, পিকে হালদারের প্রতারণায় সহায়তাকারী ২৪ জনের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। আর এখন পর্যন্ত তার সহযোগী হিসেবে ৬২ জনকে শনাক্ত করেছে দুদক।
আরএম/টিএইচ/এমএইচএস