‘ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় সবাইকে জাগ্রত থাকতে হবে’
দেশের ভেতরে যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় নেতাকর্মীদের জাগ্রত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
শনিবার (২৩ জানুয়ারি) রাজধানীর গুলিস্তানে অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মরহুম এম. এ. আজিজ-এর স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
তাপস বলেন, ৭৫’র ১৫ আগস্ট বাংলাদেশে আর আসবে না, ১/১১ আর আসবে না; এটা কিন্তু মনে করা যাবে না। ষড়যন্ত্রকারীরা সারাজীবন ষড়যন্ত্র করবে। তারা সবসময় অশান্তি সৃষ্টির পায়তারা করে যাচ্ছে। এই বিষয়ে সবাইকে সতর্ক ও জাগ্রত থাকতে হবে। এজন্য সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।
তিনি বলেন, নিজেদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানো যাবে না। মহানগর আওয়ামী লীগ যদি শৃঙ্খলবদ্ধ ও শক্তিশালী থাকে, তাহলে যেকোনো ষড়যন্ত্রই মোকাবিলা আমাদের জন্য সহজ হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে পারব।
বিজ্ঞাপন
মেয়র বলেন, মহানগরের প্রতিটি ওয়ার্ড ও থানায় তৃণমূল থেকে সংগঠনকে সাজাতে হবে। সংগঠনের শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে তৃণমূলের প্রতিটি ত্যাগী, পরিশ্রমী ও দক্ষ নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে। তিনি আরও বলেন, দল ক্ষমতায় রয়েছে, অনেকেই সুযোগ নিতে দলে আসবে। কিন্তু এদের দলে স্থান দেওয়া যাবে না। অনুপ্রবেশকারীদের দল থেকে বিতাড়িত করতে হবে।
তাপস বলেন, মরহুম এম. এ. আজিজ ছিলেন তাদের একজন। তিনি সবসময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক আদর্শ নিয়ে কাজ করতেন। সহজেই কর্মী ও সাধারণ মানুষকে বুকে টেনে নিতেন। নিয়মিত কর্মীদের খোঁজখবর নিতেন। সংগঠনের খোঁজখবর নিতেন। কোনো লোভ তাকে কখনো ছুঁতে পারেনি। তার সেই রাজনৈতিক দর্শন থেকে আমাদের সবাইকে শিক্ষা নিয়ে আগামীর পথ চলতে হবে। এসময় দলীয় নেতাকর্মীদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার পরামর্শও দেন দক্ষিণ সিটির এই মেয়র।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস মোকাবিলার প্রশংসা করে তিনি আরও বলেন, করোনা নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলেছেন। অনেক বিভ্রান্ত ছড়ানো হয়েছে। তারপরও কিন্তু করোনার টিকা দেশে পৌঁছে গেছে। এটাই বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বগুণ।
স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী বলেন, মরহুম এম. এ. আজিজ ছিলেন একজন ভদ্র রাজনীতিবিদ। তার হাত ধরেই মহানগর আওয়ামী লীগ সফল আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে। মহানগরের রাজনীতিতে তার অবদান অসামান্য। অথচ ১/১১ সরকারের সময় আওয়ামী লীগের অনেক বড় বড় নেতা ছিলেন। সেসময় তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। কিন্তু তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্যে মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির বলেন, মাঠের আন্দোলন সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মরহুম এম. এ. আজিজ। তিনি নির্লোভ রাজনীতিবিদ ছিলেন। বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময়ে দলীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি দিলীপ কুমার রায়, আব্দুস সাত্তার মাসুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মোরশেদ হোসেন কামাল, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আশরাফ তালুকদার, দপ্তর সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ, কার্যনির্বাহী সদস্য সালাউদ্দিন বাদল, মরহুম এম এ আজিজের সন্তান ওমর বিন আবদাল আজিজ তামিম, চকবাজার থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউনুস সুমন প্রমুখ।
সকাল সাড়ে দশটায় রাজধানীর আজিমপুর কবর স্থানে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির। এসময় মহানগরের বিভিন্ন ইউনিটির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এইউএ/জেডএস