রাজধানী ঢাকার সড়কের যে চিত্রটা সবার কাছে সবচেয়ে বেশি পরিচিত সেটা হলো যানজটের চিত্র। গন্তব্যে পৌঁছাতে স্বাভাবিক সময়ের দ্বিগুণ সময় লাগাটা এ শহরের স্বাভাবিক জীবনযাত্রারই একটা অংশ।  

রোববার (৩১ অক্টোবর) সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ঘুরে দেখা গেছে প্রায় প্রতিটি সড়কেই সকাল থেকে লেগে আছে যানজট। সড়কে অতিরিক্ত গাড়ির চাপের পাশাপাশি অফিসগামী বা কাজে বের হওয়া মানুষদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে দেখা গেছে যানজটের কারণে।

রাজধানীর রামপুরা ব্রিজ থেকে প্রগতি সরণিতে বাসসহ সব যানবাহনের ধীর গতি দেখে উত্তর বাড্ডায় বাস থেকে নেমে হেঁটেই নতুন বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী আব্দুস সোবহান। তিনি বলেন, একমাত্র ছুটির দিন ছাড়া প্রতিটা দিনই রাজধানীর প্রতিটা সড়কে এখন নিয়মিত যানজট দেখা যাচ্ছে। এই করোনা কালের পর থেকে রাজধানীতে যানজটের মাত্রা বেড়েছে। সকাল থেকে যানজট তাই প্রতিটি যানবাহন খুব ধীরগতিতে চলছে। অবস্থা এমন দেখে উত্তর বাড্ডায় নেমে গেছি নতুন বাজার পর্যন্ত হেঁটেই যাবো, আর তা না হলে অফিসে ঢোকার সময় পেরিয়ে যাবে।

রাজধানীর মহাখালী আমতলী এলাকায় যাত্রী নামিয়ে অটোরিকশা চালক এরশাদ আলী বলেন, শাহবাগ থেকে মহাখালী পর্যন্ত আসতে পুরো সড়কে যানজট ছিল। একে অফিস টাইম অন্যদিকে সড়কে যানবাহনের চাপ, ফলে আজ সকাল থেকেই প্রতিটা সড়কে অতিরিক্ত যানজট। এখন প্রতিদিনই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রাজধানীর সড়কে যানজট হয় নিয়মিত। যাত্রী নিয়ে যাওয়ার সময় দীর্ঘক্ষণ যানজটে বসে থাকতে হয়। ফলে আগের তুলনায় আমাদের ট্রিপ কম হচ্ছে।

মিরপুর ১ নম্বর থেকে আসা বনশ্রীগামী আলিফ পরিবহনের একটি বাস গুলশান ১ নম্বর সিগন্যালে দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে ছিল। বাসটির সহকারী (হেলপার) নাজিম উদ্দিন বলেন, পুরো সড়কেই যানজট, এর মধ্যে যাত্রী নিয়ে খুব ধীরগতিতে গুলশান পর্যন্ত এলাম। বাকি সড়কেও যানজট আছে। যানজট এখন প্রতিদিনই হচ্ছে তাই আগের চেয়ে আমাদের ট্রিপ কমে গেছে, যানজটেই দীর্ঘ সময় এখন অপেক্ষার ফলে ট্রিপ কমে যাচ্ছে।

দেওয়ান পরিবহনের একটি বাসে আজিমপুর থেকে নিউমার্কেট, শাহবাগ, ফার্মগেট, মহাখালী, গুলশান, বাড্ডা হয়ে কুড়িল বিশ্বরোড পর্যন্ত আসা যাত্রী তরিকুল ইসলাম বলেন, একটা কাজে কুড়িল বিশ্বরোডে এসেছি, যে কারণে সকাল সকাল বাসা থেকে বের হয়েছি, তবুও দীর্ঘ সময় লেগে গেল এখানে পৌঁছাতে। পুরো সড়ক জুড়েই ছিল গাড়িগুলোর ধীর গতি। আর একটি সিগন্যালে পড়তে হয়েছে দুই তিনবার করে। সড়কে গাড়ির সংখ্যাও অনেক বেশি। অফিসের কাজে আমার প্রতিদিন রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে যেতে হয়। ইদানিং মনে হচ্ছে যানজটের মাত্রা আরও বেড়েছে, প্রতিটা দিনই রাজধানীর প্রতিটা সড়কে অতিরক্ত যানজট দেখা যাচ্ছে।

মালিবাগ আবুল হোটেলের সামনে কথা হয় রাইড শেয়ারিংয়ে মোটরসাইকেল চালক জয়নাল হকের সঙ্গে। তিনিও একই ধরনের অভিযোগ জানিয়ে বলেন, আমরা অনেকেই অ্যাপে ট্রিপের পাশাপশি চুক্তিতেও যাত্রী পরিবহন করি। সকাল বেলায় অফিস টাইমে যাত্রী বেশি পাওয়া যায়, তাই সকালকে টার্গেট করে আমি বের হই। কিন্তু একটা যাত্রীকে কাঙ্ক্ষিত স্থানে পৌঁছে দিতেই অনেক সময় পেরিয়ে যায়। ফলে অফিস টাইমে অতিরিক্ত যানজট হওয়ার কারণে দ্বিতীয় বা তৃতীয় ট্রিপ দেওয়ার আর সুযোগ হয় না। ইদানিং যানজটের মাত্রা আরও বেশি হয়েছে, ফলে আগের চেয়ে ট্রিপের সংখ্যাও আমাদের কমেছে।

এএসএস/এনএফ