আগামী দুই দশকে গোটা বিশ্বের তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়বে। যার ফলে অত্যধিক গরম আবহাওয়া, দীর্ঘস্থায়ী বর্ষা এবং খরার প্রকোপ বৃদ্ধি পাবে। এতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো ভয়াবহ সংকটে পড়বে।

বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোর স্কটিশ ইভেন্ট সেন্টারের বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে ‘সার্কভুক্ত দেশগুলোর পরিবেশমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সাউথ এশিয়া কো অপারেটিভ এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম’ অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি নিয়ে আলোচনা করেন বক্তারা।

বৈঠকে বাংলাদেশর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, পাকিস্তানের পরিবেশমন্ত্রী মালিক আলামিন আসলাম খান, শ্রীলঙ্কার পরিবেশমন্ত্রী রামিন্দ্রা আমার ওয়েরা, নেপালের পরিবেশমন্ত্রী রামসে প্রসাদ যাদব, মালদ্বীপের পরিবেশ মন্ত্রী আমিনা শাইনা, ভারতের পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব, ভুটানের পরিবেশমন্ত্রী লিয়েন পো ইয়েরি পেনজর উপস্থিত ছিলেন। তবে আফগানিস্তানের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না।

সভায় ৫টি বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে অন্যতম জলবায়ু মোকাবিলায় আঞ্চলিক সংলাপ জোরদার করা, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির ভিত্তিতে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়গুলো শনাক্ত করা। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা যৌথভাবে সামলানো, প্রয়োজনে অর্থ, প্রযুক্তি ও নলেজ শেয়ার করা। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় একটি রোড ম্যাপ প্রস্তুত করা।

সভায় জানানো হয়, ভয়াবহ জলবায়ু ঝুঁকিতে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো। বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ  এবং পাকিস্তানে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট ধীর গতির দীর্ঘমেয়াদি যে প্রভাব লক্ষ্য করা যায় তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, ফসল উৎপাদন হ্রাস, বাস্তুতন্ত্র ও জীব-বৈচিত্র্যের ক্ষতি এবং খরা।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সার্কভুক্ত দেশগুলো প্যারিস চুক্তির সময় জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় যেসব কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছিল তা পালনে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে দেশগুলোতে বছর প্রতি অভিবাসীর সংখ্যা ৩৭.৪ মিলিয়ন ছাড়িয়ে যেতে পারে। ২০৫০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা বছর প্রতি ৬২.৯ মিলিয়নে গিয়ে পৌঁছাতে পারে।

এছাড়া সমুদ্র স্তরের উচ্চতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার মত উপকূলীয় দেশগুলোকে হুমকির মুখে ফেলেছে। নেপালে তাপমাত্রা বাড়ার ফলে হিমবাহ গলে যাচ্ছে। আফগানিস্তান, ভুটানে দেখা দিচ্ছে খরার প্রকোপ। এছাড়া মালদ্বীপের মত ঘনবসতিপূর্ণ দ্বীপরাষ্ট্রও একদিন তলিয়ে যাবে সমুদ্রের গহ্বরে। এইসব বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দিতে হবে।

মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে ভয়াবহ ঝুঁকিতে দক্ষিণ এশিয়া রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন এখন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। যার ফলে বন্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণিঝড়সহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ছে। তাই সবাইকে একসঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলা করতে হবে।

এসআর/এসকেডি