রাজধানীর বেইলি রোডে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে রিকশাচালক, আরোহী বাবা ও তার কোলের পাঁচ মাসের শিশুকে আহত করে তাসকিন বাসায় চলে যায়। পরের দিন শনিবার (২০ নভেম্বর) সকাল সাড়ে সাতটার দিকে তাসকিনের মাকে নিয়ে বাসে করে মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলায় তার দাদার বাড়ি চলে যায়। সেখান থেকে আবার চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গায় তার খালার বাড়িতে গিয়ে আত্মগোপনে থাকে। পরে দুই উপজেলার থানা পুলিশের সহায়তায় তাদেরকে গ্রেফতার করে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগ পুলিশ।

তেজগাঁও বিভাগ পুলিশ জানায়, তাসকিনের ব্যবহার করা প্রাইভেটকারটি জব্দ করেছে পুলিশ। ধাক্কা দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত তাসকিন আহমেদ বা তার পরিবার এই গাড়িটির মালিক নয়। গাড়িটির মালিক ওয়ারী থানার কামাল নামে এক ব্যক্তি।

রোববার (২১ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর শ্যামলীতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকার নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। 

বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, গত শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর মগবাজার এলাকার বাসিন্দা শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা ফখরুল হাসান ও তার পাঁচ মাসের শিশুপুত্রকে নিয়ে বের হন। তিনি একটি রিকশা নিয়ে মগবাজার থেকে বেইলি রোড হয়ে রমনা পার্কের দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে বেইলি রোডে একটি বেপরোয়া গতির প্রাইভেটকার তাদের বহনকারী রিকশাকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে রিকশাচালক আনোয়ার ইসলামসহ গুরুতর আহত হন ব্যাংক কর্মকর্তা ও তার পাঁচ মাসের শিশু পুত্র ইব্রাহিম মোহাম্মদ বীন হাসান। দুর্ঘটনার পর জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল পেয়ে তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। 

তিনি বলেন, বেপরোয়া গতিতে ধাক্কা দেওয়ার ফলে ফখরুল হাসানের ডান হাত ভেঙে যায়, তার পাঁচ মাস বয়সী সন্তানের ডান পা ভেঙে গেছে। রিকশাচালকও পায়ে গুরুত্বর আঘাত পেয়েছেন। এছাড়া ফখরুল ও তার ছেলের মাথাসহ বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তারা সবাই এখন চিকিৎসাধীন।

তিনি আরও বলেন, গ্রেফতার তাসকিনকে ঢাকায় আনা হচ্ছে।

ডিসি তেজগাঁও বলেন, ঘটনার পর হাতিরঝিল থানার মীরবাগ এলাকায় তাসকিনের বাসা থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়। গাড়ির কাগজপত্র চেক করে দেখা গেছে এই গাড়ির মালিক তাসকিন বা তার পরিবারের কেউ না। ওয়ারী এলাকার কামাল নামের এক বাসিন্দা।

তাসকিনের গাড়ি চালানোর লাইসেন্স ছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাসকিন আহমেদের জন্ম ২০০৬ সালে। সে হিসেবে তার বয়স ১৫ বছর। এই বয়সে তার লাইসেন্স থাকার কথা না। সে রাজধানীর একটি স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সেখান থেকে ভর্তি বাতিল করে অন্যত্র ভর্তি হয়েছে বলে জানা গেছে। তার বাবা একজন আইনজীবী বলে আমরা জানতে পেরেছি।

গাড়ি চালানোর সময় তাসকিন মাদকাসক্ত ছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাসকিনকে এখনো আমরা হাতে পাইনি। আমাদের একটি টিম তাদের নিয়ে আসছে। তাদেরকে পাওয়া পর জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যাবে এবং তার ডোপ টেস্ট করা হবে। বিষয়টি রমনা থানা তদন্ত করে আপনাদের জানাতে পারবে। কারণ এই ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে রমনা থানায়।

এমএসি/এইচকে