পুলিশে যুক্ত হচ্ছে সর্বাধুনিক অপারেশনাল গিয়ার
বক্তব্য রাখছেন আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ
পুলিশের আধুনিকায়নে যুক্ত হচ্ছে সর্বাধুনিক অপারেশনাল গিয়ার। যার মধ্যে থাকবে ট্যাকটিক্যাল বেল্ট, স্মল আর্মস ও হ্যান্ডস ফ্রি কমিউনিকেশন।
মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।
বিজ্ঞাপন
নতুন এ অপারেশনাল গিয়ারের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের অস্ত্রসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম বেল্টে রক্ষিত থাকবে, হাত থাকবে সম্পূর্ণ খালি। এতে দীর্ঘ সময় ধরে দায়িত্ব পালন তাদের জন্য আরামদায়ক হওয়ার পাশাপাশি অপারেশনাল দক্ষতাও বৃদ্ধি পাবে।
প্রথম ধাপে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাত হাজার সদস্য ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) তিন হাজার সদস্য এই অপারেশনাল গিয়ারগুলো পাবেন। যা পর্যায়ক্রমে সব মেট্রোপলিটন, জেলা ও গ্রাম পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের সঙ্গেও যুক্ত হবে।
বিজ্ঞাপন
সংবাদ সম্মেলনে আইজিপি বলেন, বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামে এটি ব্যবহার শুরু হবে। এরপর ধাপে ধাপে সব জায়গায় এর প্রচলন করা হবে। আশা করছি আগামী এক মাসের মধ্যে ডিএমপি ও সিএমপি সদস্যরা নতুন এ ধারার সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করতে পারবেন। উন্নত বিশ্বে রুটিন ডিউটিতে পুলিশ ভারী অস্ত্র ব্যবহার করেন না। এখন থেকে আমরাও সেই বিষয়টি প্রচলন করতে চাই। এর ফলে পুলিশ সদস্যরা কোনো ধরনের অস্বস্তি ছাড়াই দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।
তিনি বলেন, আমরা চাই না ঢাকার রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের এক হাতে ওয়্যারলেসে অকুপাইড হয়ে থাকুক। নতুন গিয়ার সংযোজনের ফলে ওয়্যারলেস চলে যাবে বেল্টে। কাঁধে সংযোজিত মাইক্রোফোনের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যরা ওয়্যারলেস ব্যবহার করতে পারবেন।
আইজিপি বলেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে পুলিশের হার্ডওয়্যারগত পরিবর্তন হচ্ছে। তবে এর পাশাপাশি সফটওয়্যারগত পরিবর্তন অর্থাৎ আচরণগত পরিবর্তনও জরুরি। আমরা চাই পুলিশের সর্বকনিষ্ঠ থেকে সর্বোচ্চ পদের সদস্যদের আচরণ হবে সর্বোচ্চ অনুকরণীয়। হার্ডওয়্যারগত পরিবর্তন করে প্রত্যাশা পূরণ সম্ভব না, এজন্য আচরণগত পরিবর্তন দরকার। মনোজগতের পরিবর্তনের মাধ্যমে আমরা দ্রুতই নতুন পরিবর্তনের সঙ্গে অভ্যস্ত হতে পারবো বলে বিশ্বাস করি।
সর্বাধুনিক এই অপারেশনাল গিয়ার চালুর উদ্দেশ্য সম্পর্কে পুলিশ সদর দফতর জানায়, স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে রুটিন দায়িত্ব পালনের সময় ভারী ও বহনে কষ্টকর লং আর্মসের পরিবর্তে হালকা ও সহজে বহনযোগ্য শর্ট আর্মস ব্যবহার করা। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে বেশি ক্যাজুয়ালটি এড়াতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন লং ব্যারেল আর্মসের ব্যবহার ধারাবাহিকভাবে কমিয়ে আনা।
এ অপারেশন গিয়ার চালু করার বিশেষত্ব উল্লেখ করে পুলিশ জানায়, একজন পুলিশ সদস্যের দায়িত্ব পালনের সময় যেসব সরঞ্জামের প্রয়োজন, তার সবগুলোই এ গিয়ারের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। জনশৃংখলা রক্ষায় পুলিশের জন্য অতি প্রয়োজনীয় সরঞ্জামগুলো এতে এমনভাবে সংযোজন করা হয়েছে, যাতে দায়িত্ব পালনের সময় তারা খুব সহজেই দরকারি জিনিস মুহূর্তের মধ্যেই পেয়ে যান।
ট্যাকটিক্যাল বেল্টের সঙ্গে থাই হোলস্টার যুক্ত করে সেখানে স্মল আর্মস রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও বেল্টের সঙ্গে এক্সপ্যান্ডেবল আটক, টর্চ লাইট, হ্যান্ড কাফ ও পানির বোতল রাখার সুযোগ রয়েছে।
জরুরি মুহূর্তে দ্রুত মেসেজ আদান-প্রদান নিশ্চিত করতে ওয়্যারলেস সেটের সঙ্গে একটি মাইক্রোফোন ও ওয়্যারলেস সেট জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এতে করে দায়িত্ব পালনের সময় পুলিশ সদস্যরা ওয়্যারলেস সেট মুখের কাছে না এনেই মেসেজ আদান-প্রদান করতে পারবেন।
এআর/এমএইচএস/জেডএস