২০৫০ সাল নাগাদ পানির চাহিদা বাড়বে ৫০ শতাংশ
পৃথিবীর ৪শ কোটি মানুষ বছরের একটি নির্দিষ্ট সময় বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভোগেন। এ অবস্থায় ২০৫০ সালের মধ্যে পানির চাহিদা আরও ৫০ শতাংশ বেড়ে যাবে বলে মনে করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী।
৬ষ্ঠ আন্তর্জাতিক পানি সম্মেলনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, কৃষিক্ষেত্রসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পানি অপরিহার্য। বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী দিনের জন্য পানির উৎসগুলোর যথাযথ সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে। দুষ্প্রাপ্যতার কারণে ভবিষ্যতে পানি এবং পানির উৎসই রাষ্ট্রীয় সংঘাতের কারণ দাঁড়াতে পারে। সেক্ষেত্রে মানুষের উন্নত জীবন নিশ্চিত করতে টেকসই পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা প্রণয়ন জরুরি।
ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-এর পরিচালক ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ প্রফেসর সালেমুল হক বলেন, ব-দ্বীপ আকৃতির বাংলাদেশের বেশিরভাগ অংশজুড়েই রয়েছে পানি। তবে, ধীরে ধীরে ভূপৃষ্ঠের ওপরে পানির উৎসব কমে যাওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে পানির তীব্র সংকট দেখা দিচ্ছে। এমনকি, খরাপ্রবণ রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চল কৃষিকাজের জন্য ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। বর্ষা মৌসুম এলেই ঢাকা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়, এজন্য অপরিকল্পিত পানি ব্যবস্থাপনাই দায়ী।
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ড রাষ্ট্রদূত নাথালি শিউআখ্ বলেন, পানি মৌলিক প্রাকৃতিক সম্পদ যা দুটি দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মহামারি কোভিড-১৯ থেকে শিক্ষা নিয়ে, বিভিন্ন দেশের মধ্যদিয়ে বয়ে যাওয়া অভিন্ন পানির উৎসগুলোর সঠিক ব্যবস্থাপনা করতে হবে।
জাতিসংঘের আসন্ন জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনের এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় ও দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক দূত কেন ও’ফ্লেহার্টি বলেন, টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে যুক্তরাজ্য সব দেশকে সহায়তা দিতে প্রস্তুত। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্যদেশের সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। যুক্তরাজ্য আগামী ৫ বছরের জন্য ১১.৪ বিলিয়ন পাউন্ড বরাদ্দ রেখেছে, যার অর্ধেক অর্থ ব্যয় হবে অভিযোজন খাতে।
সম্মেলনে আরও যুক্ত ছিলেন নেপালের প্রাক্তন পানিসম্পদমন্ত্রী ও শিক্ষাবিদ ডা. দীপক গাওয়ালী, অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির, অ্যাকশনএইড আন্তর্জাতিক বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ পরিষদের সদস্য ইব্রাহিম খলিল আল-জায়েদ, পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ড. বুশরা নিশাত ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ প্রমুখ।
এইচএন/জেডএস