ভুয়া রফতানি দেখিয়ে নগদ সহায়তা বাবদ ৯৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বিএনএস গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এন এইচ বুলুসহ তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সহকারী পরিচালক প্রবীর কুমার দাস বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। দুদক উপপরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার আসামিরা হলেন- বিএনএস গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এন এইচ বুলু, আমির ফুড প্রডাক্টসের মালিক ও বুলুর বড় ভাই মো. আমির হোসেন ও উত্তরার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশ্যে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের বনানী শাখা থেকে ভুয়া রফতানি দেখিয়ে নগদ সহায়তা বাবদ ৯৮ লাখ ১৫ হাজার ৬৮৯ টাকা গ্রহণ করে। একইসঙ্গে ওই টাকা মানিলন্ডারিংয়ের উদ্দেশ্যে স্থানান্তর, হস্তান্তর ও রুপান্তর করে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ তৎসহ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

সূত্র আরো জানায়, সি শিল লজিস্টিক বাংলাদেশ নামের ভুয়া প্রতিষ্ঠান খুলে প্রতিষ্ঠানের নামে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের বনানী শাখায় ২০১২ সালের ১৪ আগস্ট থেকে ২০১৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২৬টি অগ্রিম এফটিটি বাবদ ১৫ লাখ ৯৮ হাজার ৫৪৫ মার্কিন ডলার জমা করেন। এর মধ্যে ১০টি এফটিটি বাবদ ৬ লাখ ৮ হাজার ৩৫ মার্কিন ডলার সমমূল্যের পণ্য রফতানি দেখিয়ে আসামিদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে ২০ শতাংশ হারে মোট ১৮ লাখ ১৫ হাজার ৬৮৯ টাকার নগদ সহায়তা গ্রহণ করেন। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন বিভাগের বিশেষ পরিদর্শন তাদের দাখিল করা সব ডকুমেন্টগুলো ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে। তারা ভুয়া রফতানি ডকুমেন্ট তৈরি করে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংকের বনানী শাখা থেকে সরকারি নগদ প্রণোদনার অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। যা দুদকের অনুসন্ধানেও প্রমাণিত হয়েছে।

এর আগে ২০১৮ সালের ৭ অক্টোবর প্রায় ১৩৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের দায়ে বিএনএস গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বিএনএস সেন্টারের মালিক এম এন এইচ বুলুর বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলায় তার বিরুদ্ধে ১০৯ কোটি ১৭ লাখ ৫৬ হাজার ৯৮১ টাকা মূল্যমানের সম্পদের তথ্য গোপন এবং ২৪ কোটি ৭৮ লাখ ৬৬ হাজার ৬২২ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। রাজধানীর রমনা থানায় দুদকের তৎকালীন উপ-পরিচালক ওয়াকিল আহমেদ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। গুলশানের বহুতল ভবন বুলু ওশান টাওয়ার ও বুলু এস টাওয়ারের মালিক এম এন এইচ বুলু ২০০৮ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ঢাকা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ছিলেন। এম এন এইচ বুলু ওই মামলায় বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।

সম্প্রতি ওই মামলায় আদালত থেকে জামিন পেলেও আজকের মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

আরএম/জেডএস