ভারতের ‘উপহারের’ টিকা দেওয়া হবে ৩ জেলায়
বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে করোনার টিকা/ ছবি: ঢাকা পোস্ট
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশে একযোগে শুরু হচ্ছে টিকা প্রয়োগ কর্মসূচি। ইতোমধ্যেই ৬১ জেলার ৪৮৩ উপজেলায় সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) স্টোরে টিকা পৌঁছে দিয়েছে বেক্সিমকো ফার্মা। ঢাকাসহ বাকি তিন জেলায় দেওয়া হবে ভারত সরকারের দেয়া উপহারের ২০ লাখ ডোজ টিকা।
রোববার (৩১ জানুয়ারি) রাতে ঢাকা পোস্ট-কে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন বেক্সিমকোর চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) রাব্বুর রেজা। তিনি বলেন, ‘সারাদেশে ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে করোনার টিকা দেওয়া শুরু হবে। সেই লক্ষ্যে সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ৬১ জেলায় করোনার টিকা পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। টিকার সঠিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে টিকা পাঠানো হয়েছে বিশেষায়িত ট্রাকে।’
বিজ্ঞাপন
রাব্বুর রেজা বলেন, ‘সরকার আমাদের ৫০ লাখ টিকা ৬১ জেলায় পৌঁছানোর একটি তালিকা দিয়েছিল। সেই তালিকা অনুযায়ী আমরা টিকা পৌঁছে দিয়েছি। বাকি তিন জেলায় ভারত থেকে পাওয়া উপহারের টিকা পাঠানো হবে সরকারি ব্যবস্থাপনায়।’
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ডা. রওশন জাহান আক্তার আলো গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ভারত সরকারের উপহার দেওয়া ২০ লাখ ৪ হাজার ডোজ টিকা রাখা হয়েছে তেজগাঁওয়ের ইপিআই স্টোরে। সরকারি ব্যবস্থপনায় ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ জেলায় এগুলো সরবরাহ করা হবে।’
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, ‘ইপিআই স্টোরের আইএলআরে (হিমায়িত বাক্সে টিকা রাখার ব্যবস্থা) এসব টিকা রাখা হয়েছে। সেখান থেকে কোল্ড বক্সে করে নেওয়া হবে টিকাদান কেন্দ্রে। সংক্রমণের হার, জনসংখ্যার ঘনত্ব বিবেচনা করে সারা দেশে টিকা বণ্টন করা হয়েছে।’
আজকালের মধ্যেই সারাদেশে পৌঁছাবে টিকা
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. খোরশেদ আলম বলেন, ‘আজকালের মধ্যে সারাদেশের ৬৪ জেলায় টিকা পৌঁছাবে। বেক্সিমকো ফার্মা আমাদের বলেছে, আজকালের মধ্যে তারা জেলায় জেলায় টিকা পৌঁছে দেবে। সারাদেশে টিকা প্রয়োগের সব সরঞ্জামও প্রস্তুত আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়নের বুথগুলোকে প্রস্তুত করা হয়েছে। আগামীকালের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট কর্মীদের প্রশিক্ষণ শেষ হবে। সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে আগামীকাল উপজেলার ফোকাল পারসনদের ভার্চুয়াল একটা মিটিং অনুষ্ঠিত হবে। তাদের থেকে যা পরামর্শ আসবে আগামী ৫-৬ দিনের মধ্যে সেগুলো নিয়ে কাজ করা হবে। টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়নে সাত হাজার ৪০০ টিম কাজ করছে।’
গত বুধবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে অনলাইনে যুক্ত হয়ে দেশে টিকা প্রয়োগ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রথম দিনেই ২৭ জনের দেহে প্রয়োগ করা হয় ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার এ টিকা। ওইদিন দেশের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে বেক্সিমকোর আনা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার টিকা নিয়েছেন সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু বেরুনিকা কস্তা। তিনি কুর্মিটোলা হাসপাতালের ডায়ালাইসিস ইউনিটের ইনচার্জ।
টিকা নেওয়া পরের চার জন হলেন- ডা. আহমেদ লুৎফুল মোবেন, স্বাস্থ্যের অতিরিক্ত ডিজি নাসিমা সুলতানা, পুলিশ সদস্য দিদারুল ইসলাম এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম ইমরান হামিদ।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে মন্ত্রী, আমলা, চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীসহ ৫ শতাধিক ব্যক্তি টিকা নিয়েছেন।
জানা গেছে, রাজধানীর পাঁচটি হাসপাতালে দ্বিতীয় দিনে মোট ৫৪১ জনকে টিকা দেওয়া হয়। এর মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১২০ জনকে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৮ জনকে, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ১০০ জনকে, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ৫৮ জনকে এবং মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬৫ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে।
টিআই/এফআর