হাসিনা-মোদি বৈঠক হতে পারে ২৭ মার্চ
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ঢাকায় সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আগামী ২৫ বা ২৬ মার্চ তার আসার সম্ভাবনা রয়েছে। সফর নিশ্চিত হলে ২৭ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে।
রোববার (৩১ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ তথ্য জানান পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
বিজ্ঞাপন
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিবর্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী ২৫ বা ২৬ মার্চ তিনি সফরে আসবেন। তার সফর নিশ্চিত হলে ২৭ মার্চ দুই প্রধানমন্ত্রী বৈঠক করবেন।’
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিবর্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানাতে বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) নয়াদিল্লি সফরে যান পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। সফর শেষে রোববার দেশে ফিরেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের আগে ঢাকা-নয়াদিল্লির চারটি মন্ত্রণালয়ের সচিব পর্যায়ের বৈঠক হবে। এরমধ্যে পানি ও বাণিজ্য সচিবদের বৈঠক নয়াদিল্লিতে হবে, আর স্বরাষ্ট্র ও শিপিং সচিবদের বৈঠক ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে।’
দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের আগে ঢাকা-নয়াদিল্লির মধ্যে চার থেকে পাঁচটি চুক্তি সই নিয়ে উভয়পক্ষ কাজ করছে বলে জানান মাসুদ বিন মোমেন। একইসঙ্গে সচিব জানান, নরেন্দ্র মোদির সফরের আগে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বাংলাদেশে সফরের সম্ভবনা রয়েছে।
সফর প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘তিস্তা নিয়ে আলোচনা করেছি আমরা। বিষয়টির মীমাংসা না হওয়ার হতাশার কথা জানিয়েছি, তারা আশ্বাস দিয়েছে। আমরা তিস্তা চুক্তি নিয়ে আশাবাদী। ছয়টি অভিন্ন নদী নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
পররাষ্ট্র সচিবের ভারত সফরে শুক্রবার দেশটির হায়দ্রাবাদ হাউজে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার নেতৃত্বে দুই দেশের ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) শীর্ষক বৈঠক হয়। ওই সময় তিস্তা চুক্তি সমাধানে নয়াদিল্লিকে অনুরোধ করে ঢাকা।
ভারতের পক্ষ থেকে তিস্তার বিষয়ে জানানো হয়, তিস্তা চুক্তি সমাধানের চিন্তা করা হচ্ছে। তবে ছয়টি অভিন্ন নদীর সমাধানের বিষয়ে প্রথম গুরত্ব দেওয়া হচ্ছে।
বৈঠক নিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, উভয়পক্ষ সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার বিষয়ে একমত পোষণ করেছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকের আলোচনায় ২০২১ সালের মার্চে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের প্রস্তুতি এবং দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫০ বছর পূর্তির কর্মসূচি ঠিক করার বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রে ভারতের ঋণ চুক্তির (এলওসি) দ্রুত বাস্তবায়নের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছে উভয়পক্ষ। একইসঙ্গে উন্নয়ন অংশীদারিত্ব মেকানিজমের কার্যক্রম শুরুর ব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করে তহবিলের ব্যবহার বাড়ানো এবং অনুমোদন প্রক্রিয়া দ্রুত করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে উভয়পক্ষ।
বৈঠকে উভয়পক্ষের আলোচনায় কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সহযোগিতা, বাণিজ্য, যোগাযোগ, উন্নয়ন অংশীদারিত্ব, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও পানি সম্পদ, আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতার পাশাপাশি সীমান্ত ব্যবস্থাপনা এবং নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিষয় উঠে আসে।
বৈঠকে ঢাকার পক্ষ থেকে কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য একটি পরিবেশ তৈরির বিষয়ে নয়াদিল্লিকে অনুরোধ করা হয়।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে বৈঠকে আলোচনার প্রসঙ্গে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘রাখাইনে রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করার কথা বলেছি ভারতকে। তাদের বলেছি, সেখানে ভারত, জাপান, আসিয়ানের অন্যান্য দেশও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে পারে।’
এনআই/জেডএস