ফাইল ছবি

স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতির অভিযোগে আজ পর্যন্ত আমলাদের কিছু হয়নি দাবি করে বিস্ময় প্রকাশ করে সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেছেন, তারা এতো শক্তিশালী!

সোমবার জাতীয় সংসদের একাদশ অধিবেশনে ‘শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিল-২০২১’ ওপর সংশোধনী প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। 

গণফোরামের মোকাব্বির খান বলেন, স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতি সংবাদে আসছে। কারা করছে? এই দুঃসাহস কিভাবে পায়? যারা জড়িত তাদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সব দোষ আসে মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে। কিন্তু আমলাদের কিছু হয় না। তারা এতো শক্তিশালী! অথচ দুর্নীতি হয় প্রকল্প পরিচালক লেভেলে। আজ পর্যন্ত একজন সচিব বা প্রকল্প পরিচালকের কিছু হয়নি।

বিএনপির হারুনুর রশীদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নামে যে বিশ্ববিদ্যালয়টি হতে যাচ্ছে সেটি সত্যিকার অর্থে কাজের বিশ্ববিদ্যালয় হতে হবে। নাম ও কামের মিল থাকতে হবে। বঙ্গবন্ধুর নামে যে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়টি হয়েছে সেটি কোনো গ্রেডেই নেই। দলীয় পরিচয়ে নিয়োগ করা হয়ে। যে উদ্দেশ্য-লক্ষ্য নিয়ে স্থাপন করা হচ্ছে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী যাতে এ ব্যাপারে যথাযথ উদ্যোগ নেন এবং প্রধানমন্ত্রী যথাযথ নির্দেশনা দেন তবে এটি কাজ করবে।

হারুন বলেন, ১১২টি মেডিকেল কলেজের তথ্য মন্ত্রী দিলেন। কিন্তু এর কোয়ালিটি কী? সংখ্যা দিয়ে কী করবো? যদি মান না থাকে। করোনার ভ্যাকসিন কত দামে কিনলাম? বাণিজ্য হচ্ছে কি-না জানা দরকার। হাসপাতালগুলোতে ডাক্তাররা ঠিক মতো কাজ করছে কি-না? ডিউটির সময় অন্য জায়গায় প্র্যাকটিস করে। বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বসে হাসপাতালের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দুর্নীতির ডিপো হয়ে গেছে।
 
বিএনপির সংরিক্ষত আসনের সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় করে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা হয়তো কমবে। কিন্তু স্বাস্থ্যখাতে অপ্রতুল বরাদ্দ, চরম দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা সেগুলো কি কমবে? ব্যক্তিখাতে চিকিৎসার খরচ বাংলাদেশে বাড়ছে। পৃথিবীর কোনো দেশ করোনা নিয়ে ব্যবসা করেনি। বাংলাদেশে সেটি দেখেছি।

তিনি বলেন, নতুন নতুন আইন করে কী হবে? যদি মানুষ সেবা না পায়। নকল এন-৯৫ মাস্ক যারা দিয়েছিল সেই জেএমআই থেকে এবার টিকার সিরিঞ্জ নেওয়া হচ্ছে। কোম্পানিটি এতো শক্তিশালী! কোনো রাঘববোয়ালকে ধরা হয়নি। শাহেদের হাসপাতালের জন্য কি করে চুক্তি করে। যে শাহেদ আদলত কর্তৃক প্রতারক ঘোষিত।

জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গবেষণায় বেশি আত্মনিয়োগ করা উচিত। গবেষণার জন্য বরাদ্দ বেশি দেওয়া উচিত। বাংলাদেশে চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে, বিশেষ করে বিশেষায়িত সেবার ক্ষেত্রে মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থখাতে বরাদ্দ বাড়ানো দরকার। দুর্নীতি কমানো দরকার। মন্ত্রণালয়ের কাজে স্বচ্ছতা দরকার।

এসব কথার জবাব দিতে গিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বাস্থ্যখাতের অনিয়মের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে দাবি করেন এবং সরকারের উদ্যোগের বিস্তারিত তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, করোনাকালে রোগীর পেছনে প্রতিদিন ১৫ হাজার টাকা খরচ করেছে। যারা আইসিইউতে ছিল ৫০ হাজার টাকা প্রতিদিন খরচ করেছে। 

মন্ত্রী বলেন, আমরা কাউকে ছাড় দেইনি। সবচেয়ে কম দামে ভ্যাকসিন পেয়েছি। চুক্তিতে আছে ভারত যে দামে নেবে আমাদেরও সেই দামে দেবে। ত্রিপক্ষীয় চুক্তি। সেইভাবে টিকা পেয়েছি।

এইউএ/এনএফ