সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পৃথক তহবিল গঠনের দাবি
সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ অনুযায়ী সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য জরুরিভিত্তিতে আর্থিক সহায়তা তহবিল গঠনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। একই সঙ্গে সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের ৫ লাখ টাকা এবং নিহতদের পরিবারকে ২০ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদানের দাবিও জানানো হয়।
আজ (সোমবার) বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
বিজ্ঞাপন
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গণপরিবহনে বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা, ভাড়া নৈরাজ্য প্রতিরোধে সরকার বারবার ব্যর্থ হয়েছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর অযোগ্যতা, অবহেলা, দুর্নীতি ও দায়িত্ব পালনে গাফিলতি। পুরনো সড়ক আইন ও বিধিমালা পরিচালনায় বিভিন্ন কমিটিতে মালিক-শ্রমিকদের একচ্ছত্র আধিপত্যের কারণে সরকার বারবার অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছে। যার ফলে নতুন সড়ক পরিবহন বিধিমালায় হতাহতদের আর্থিক সহায়তার ট্রাস্টি বোর্ড গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয় এবং সেখানে মালিক-শ্রমিকদের পাশাপাশি যাত্রী প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কারিগরি লোকজন রাখার দাবি দীর্ঘদিনের। নতুন সড়ক পরিবহন আইন ২০১৯ সালের নভেম্বর মাস থেকে কার্যকর করা হয়েছে। জরিমানা আদায় হচ্ছে কিন্তু এ আইনের সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের বিষয়টি বলা হলেও দীর্ঘ ১৫ মাসেও সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য ট্রাস্টি বোর্ড গঠন না হওয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে না।
বিজ্ঞাপন
তহবিলের অর্থ সংগ্রহের বিষয়ে তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা তহবিলের অর্থ সংস্থানের জন্য সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর অধীনে বিভিন্ন মামলার যেমন হাইওয়ে পুলিশ, জেলা পুলিশ, মেট্রোপলিটন ট্রাফিক পুলিশ ও বিআরটিএর ভ্রাম্যমান আদালতের যাবতীয় জরিমানা এখানে জমা করা যেতে পারে। দেশে বর্তমানে নিবন্ধিত পরিবহন প্রায় ৪৪ লাখ। বিআরটিএ ড্রাইভিং লাইসেন্সের সংখ্যা ২৫ লাখ। প্রতিটি যানবাহন নিবন্ধন, বছর বছর ফিটনেস নবায়ন ও ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যুকালে ন্যূনতম নির্দিষ্ট অংকের ফি জমা করে, তা এই তহবিলে দেওয়া যেতে পারে। সড়ক সেতু নির্মাণ ও মেরামত কাজের ঠিকাদারের বিল পরিশোধের সময় একটি ন্যূনতম ফি আদায় করে এই তহবিলে জমা করা যেতে পারে।
তিনি দাবি জানিয়ে বলেন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মধ্য দিয়ে ওপরের খাতগুলো থেকে ডিজিটাল ব্যবস্থাপনায় তহবিল সংগ্রহ করা হলে অনায়াসে হাজার কোটি টাকা তহবিলে সংগ্রহ করা যাবে। তাই দ্রুত এই তহবিলটি গঠনের জন্য দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে তহবিল গঠন করে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক আহত ব্যক্তিকে ৫ লাখ এবং নিহতের পরিবারকে ২০ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করারও দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক ও বারভিটার সভাপতি আবদুল হক, বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হোসেন আহমেদ মজুমদার, বাংলাদেশ কাভার্ডভ্যান-ট্রাক-প্রাইমমোভার পণ্য পরিবহন অ্যাসোসিয়েশনের অতিরিক্ত মহাসচিব আবদুল মোতালেব, যাত্রী কল্যাণ সমিতির যুগ্ম মহাসচিব এম. মনিরুল হক, আনোয়ার হোসেন, রুমি প্রমুখ।
এইচএন/এনএফ