টিকাদান পরিকল্পনায় পরিবর্তন, প্রথম মাসে ৩৫ লাখ
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গণ টিকাদান পরিকল্পনায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। প্রথম মাসের লক্ষ্যমাত্রা ৬০ লাখ থেকে কমিয়ে ৩৫ লাখ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম।
বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান। স্বাস্থ্য মহাপরিচালক বলেন, ‘গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মুখ্য সচিবের সভাপতিত্বে টিকা বিতরণ সম্পর্কিত একটি বৈঠক হয়েছে। বৈঠক থেকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানোর পর পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনা হয়েছে।’
বিজ্ঞাপন
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা প্রথম ডোজ দেওয়ার চার থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া যায়। সিদ্ধান্ত হয়েছে, ৩৫ লাখ মানুষকে প্রথম ডোজ দেওয়ার পর দ্রুত দ্বিতীয় ডোজ দিয়ে দেওয়া হবে। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা প্রত্যেককেই দুই ডোজ করে দিতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম
খুরশীদ আলম বলেন, ‘৭০ লাখ টিকার অর্ধেক দিয়ে বাকি অর্ধেক রেখে এক মাস পর দেব। এতে অন্তত ৩৫ লাখ লোককে আমরা কমপ্লিট ভ্যাকসিনেশনে আনব। একটা নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে আমরা সুরক্ষিত করে দেই। প্রথম ডোজ দিলাম, কিন্তু দ্বিতীয় ডোজ যদি পেতে দেরি হয়, তাহলে পুরো বিষয়টি নষ্ট হয়ে যাবে। এর মধ্যে যদি আমাদের দ্বিতীয় লট চলে আসে, তাহলে আগের পরিকল্পনায় চলে যাব।’
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশকে অক্সফোর্ডের টিকাই দিচ্ছে কোভ্যাক্স
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বাংলাদেশকে ফাইজারের নয়, বরং অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাই দিচ্ছে কোভ্যাক্স। জোটটি প্রথম পর্যায়ে ১ কোটি ২৭ লাখ ডোজ টিকা দেবে, যার ৫০ লাখ ডোজ আগামী মার্চেই আসতে পারে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে।
সকালে ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. খুরশীদ আলম বলেন, ‘কোভ্যাক্স এক চিঠিতে জানিয়েছে বাংলাদেশকে তারা অক্সফোর্ডের টিকা দেবে। ফাইজারের টিকা পেলে তা সংরক্ষণের জন্য আমাদের খুব সমস্যায় পড়তে হতো। এখন অক্সফোর্ডের টিকা দিলে আমাদের জন্য ভালো হবে।’
এর আগে ফাইজারের তৈরি টিকা বাংলাদেশ নেবে কি-না, তা জানতে চেয়ে গত মাসে চিঠি দিয়েছিল কোভ্যাক্স। তাদের চিঠিতে বাংলাদেশ ফাইজার-বায়োএনটেকের করোনার টিকা নিতে চাইলে ১৮ জানুয়ারির মধ্যে জানাতে বলা হয়েছিল। জবাবে বাংলাদেশ সরকার ওই টিকা নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে। তবে, বুধবার বিভিন্ন দেশে টিকা বণ্টনের যে তালিকা কোভ্যাক্স প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, জুনের মধ্যে বাংলাদেশ ১ কোটি ২৭ লাখ ৯২ হাজার ডোজ কোভিড-১৯ টিকা পেতে যাচ্ছে। তালিকায় দেখা গেছে, বাংলাদেশ অক্সফোর্ডের টিকাই পাচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনস বা গ্যাভি এবং কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনসের গড়া প্ল্যাটফর্ম হলো কোভ্যাক্স। বিশ্বের সব মানুষের সংক্রামক রোগের প্রতিষেধক পাওয়া নিশ্চিত করতে এ জোট গঠিত হয়েছে।
টিআই/জেডএস