প্রতিটি জেলায় টিকা পৌঁছে গেছে : তথ্যমন্ত্রী
সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ
দেশের প্রতিটি জেলায় ভ্যাকসিন পৌঁছে গেছে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘আজকে সারাদেশের প্রতিটি জেলায় টিকা পৌঁছে গেছে। এমনকি উপজেলা পর্যায়েও পৌঁছে গেছে। জনগণের মধ্যে বিপুল উৎসাহ এ টিকা নেওয়ার জন্য। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি সারা দেশব্যাপী এ টিকা প্রয়োগ উদ্বোধন করা হবে।’
বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশের গ্লোব বায়োটেকের গবেষণাগারে করোনাভাইরাসের টিকা আবিষ্কারক দলের প্রধান দুই বৈজ্ঞানিক কাকন নাগ এবং নাজনীন সুলতানার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এ তথ্য জানান।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, ‘অনেকেই আশঙ্কা করে বলেছিল আমরা সঠিক সময়ে টিকা সংগ্রহ করতে পারবো না। সরকার ঘোষণা দিয়েছিল জানুয়ারি মাসের মধ্যে টিকা আসবে। সে সময়েই টিকা দেশে এসেছে। যখন টিকা আসলো তখন অপপ্রচার শুরু করা হলো- এ ভ্যাকসিন জনগণ নেবে না, এটার ওপর তাদের আস্থা নেই। পাশাপাশি প্রথমে এমপি-মন্ত্রীদের নেওয়ার কথা বলা হলো।’
‘এখন টিকা দেওয়ার জন্য যে পরিমাণ উৎসাহ দেখা যাচ্ছে, যারা সমালোচনা করেছিলেন তাদের দিকে তাকিয়ে টিকা ভেঙ্গচি কেটেছে। এটিই মনে হচ্ছে আজকে। সেটির সঙ্গে আজকে যুক্ত হয়েছে বঙ্গভ্যাক্স।’ যোগ করেন হাছান মাহমুদ।
বিজ্ঞাপন
মুজিববর্ষেই বঙ্গভ্যাক্স জনগণের জন্য উন্মুক্ত করার আশা প্রকাশ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, টিকা নিয়ে বাংলাদেশে অনেক কথা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে ও স্বপ্রণোদিত হয়ে সংশ্লিষ্টরা গবেষণা করেছেন এবং অত্যন্ত অল্প সময়ের মধ্যে এটি আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন। মুজিববর্ষের মধ্যেই এ টিকা পরিপূর্ণভাবে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করতে পারবে বলে আশা করছেন তারা। আমিও আশা করছি, এ টিকা শিগগির সব প্রক্রিয়া শেষ করে জনগণকে দিতে সক্ষম হবো। সরকার এক্ষেত্রে সবদিক থেকে সহায়তা করবে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, অনেকেই মনে করেছিলো করোনার শুরুতে বাংলাদেশে হাজার হাজার মানুষ মরে রাস্তায় পড়ে থাকবে। বিএনপি জামায়াতসহ কিছু বুদ্ধিজীবী এ আশঙ্কা করেছিল। এরসঙ্গে কিছু বিদেশি মিডিয়াও সুর মিলিয়েছিল। পরবর্তীতে তারা আরও আশঙ্কা করেছিলো এ মহামারি সময়ে অর্থনৈতিক মন্দার কারণে মানুষ অনাহারে মারা যাবে। আজকে প্রায় এক বছর হতে চললো, করোনা মহামারি বাংলাদেশে এসেছে। কিন্তু একজন মানুষও অভুক্ত থাকেনি, মৃত্যুবরণতো দূরের কথা। সরকার ৭ কোটি মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এক কোটি ২৫ লাখ প্যাকেট খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
করোনা টিকা ‘বঙ্গভ্যাক্স’ এর বৈজ্ঞানিক ড. কাকন নাগ ও ড.নাজনীন সুলতানাকে অভিনন্দন জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তারা মৌলিক গবেষণা করে বঙ্গভ্যাক্স নামে একটি করোনা টিকা আবিষ্কার করেছেন। যেটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ( ডব্লিউএইচও) লিস্টেড করেছে। যা বাংলাদেশ মেডিক্যাল কাউন্সিলের চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। পৃথিবীতে খুব বেশি দেশ এ টিকা আবিষ্কার করতে পারেনি। হাতেগোনা মাত্র কয়েকটি দেশ টিকা আবিষ্কার করেছে, তারমধ্যে বাংলাদেশ একটি। এজন্য আমি খুব গর্বিত। কাকন নাগ ও নাজনিন সুলতানার এ সাফল্যে আমিসহ সারা বাংলাদেশ গর্বিত।
বঙ্গভ্যাক্সের তথ্য তুলে ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, এটা একটা সিঙ্গেল ডোজ টিকা। বিশ্বে আবিষ্কার হওয়া বেশির ভাগই ডাবল ডোজ টিকা। বঙ্গভ্যাক্স টিকা একবার নিলেই হয়ে যাবে। টিকার ক্ষেত্রে এটি একটি বড় দিক। আমি অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছি, কখন আমরা এ বঙ্গভ্যাক্স আমাদের জনগণের ওপর সফলভাবে প্রয়োগ করতে সক্ষম হবো। সেদিনের জন্য অপেক্ষা করছি। সে সময় আমরা প্রয়োজনে অন্যদেশকেও সহায়তা করতে পারবো।
এসএইচআর/এমএইচএস