জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির সংবাদ প্রচার করায় সম্প্রতি বৈশাখী টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ও রিপোর্টার কাজী ফরিদকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে হুমকিদাতের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে সাতদিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা।

শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার সার্ক ফোয়ারার সামনে মানববন্ধন করে প্রতিবাদ জানান সাংবাদিক নেতাসহ সাধারণ সংবাদকর্মীরা।

এর আগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে বৈশাখী টেলিভিশন। সংবাদ প্রকাশের পরেই সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সি. সহকারী প্রক্টর মো. সুমন ইসলামের নামে কুরিয়ারে কাফনের কাপড় পাঠিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয় বৈশাখী টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ও রিপোর্টার কাজী ফরিদকে।

এ ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পরে সাংবাদিক সমাজ। তারই ধারাবাহিকতায় মানববন্ধন থেকে বক্তারা বলেন, এটি একটি ন্যক্কারজনক ঘটনা। হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে সাংবাদিকদের দমিয়ে রাখা যাবে না। সাংবাদিক নেতারা বলেন, সাংবাদিকরা সব সময় সত্য ও ন্যায়ের পথে আছে। মিথ্যার সঙ্গে কখনো আপোস করবে না। দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের যাবো আমরা। পরে মানববন্ধন থেকে এক বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে সাংবাদিক সমাজ।

কুরিয়ারে কাফনের কাপড় পাঠিয়ে হত্যার হুমকির ঘটনায় নিজের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন কাজী ফরিদ বনানী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। জিডি সূত্রে জানা যায়, গত ১১ জানুয়ারি থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বৈশাখী টেলিভিশনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে পাঁচ পর্বের অনুসন্ধানী প্রতিবদেন প্রচারিত হয়।

সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে অফিসের ঠিকানায় প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের খামে দুটি চিঠি এসেছে। চিঠিতে প্রেরকের জায়গায় লেখা আছে- মো. সুমন ইসলাম, সি. সহকারি প্রক্টর, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর। মোবাইল নম্বর- ০১৭১২৬৮৩৮০৪। দুটি চিঠির একটি ফরিদ ও অন্য চিঠি বৈশাখী টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক সাইফুল ইসলামের নামে পাঠানো।

দুটি খামের ভেতরে সাদা কাগজে টাইপ করা চিঠিতে হুমকি দিয়ে লেখা ছিলো- ‘বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বজন শ্রদ্ধেয় মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন অর রশিদ স্যার ও সফল প্রক্টর তায়েহীদ জামাল শিপু স্যারের মত সৎ ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির বিরুদ্ধে মিথ্যা অপ্রপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব ও করুণ পরিণতির জন্য তৈরি থাক, রাস্কেল।’

অভিযোগে সাংবাদিক কাজী ফরিদ উল্লেখ করেন, দুটি খামে দুজনের নামে পাঠানো দুটি চিঠির ভাষা একই। শুধু তাই নয়, দুটি খামের মধ্যে চিঠির সাথে এক টুকরো করে কাফনের কাপড়ও পাঠানো হয়েছে। চিঠি হাতে পাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে আমি ও বৈশাখী টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক সাইফুল ইসলাম চরম উদ্বিগ্ন ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

এ বিষয়ে বনানী থানার ওসি নূরে আযম মিয়া বলেন, বিষয়টির তদন্ত চলছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এমএসি/এনআই/এমএইচএস