আল-জাজিরার সম্প্রচার নিষিদ্ধের দাবি আইইবির
সংগৃহীত ছবি
‘বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের’ অপরাধে সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরা এবং জামায়াতে ইসলামীর ‘পেইড এজেন্ট’ উল্লেখ করে ডেভিড বার্গম্যানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জোড় দাবি তুলেছে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি)। শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সংগঠনটির ঢাকা কেন্দ্রের নির্বাহী কমিটির পক্ষে সম্পাদক প্রকৌশলী কাজী খায়রুল বাশার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
আল-জাজিরা প্রচারিত প্রামাণ্যচিত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সরকার ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা-বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও মানহানিকর’ উল্লেখ করে শুক্রবার সকালে পাঠানো বিবৃতিতে কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী জামাত-শিবিরের’ মুখপাত্র ‘বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগে আল-জাজিরার সম্প্রচার নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
বিজ্ঞাপন
বিবৃতিতে বলা হয়, আল-জাজিরা বহু আগে থেকেই বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করে চলেছে। জঙ্গিবাদকে উসকে দেওয়ার কাজও তারা সুচারুভাবেই চালিয়ে যাচ্ছে। এবার তারা বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার ধারা ব্যাহত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, দেশের সচেতন নাগরিকরা আল-জাজিরা কর্তৃক বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র অতীতের মতো ভবিষ্যতেও রুখে দেবেন।
আল-জাজিরা শুধু বাংলাদেশের ক্ষেত্রেই পক্ষপাতমূলক সংবাদ পরিবেশনা করছে না, বরং এ ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুবিদিত। পশ্চিমা বিশ্বে আল-জাজিরাকে দেখা হয় সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডের পরোক্ষ প্রেরণাদাতা হিসেবে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত সংবাদ পরিবেশনের কারণে মিশর ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সরকার এ সংবাদ মাধ্যমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। এখন বাংলাদেশেও জনমত জোরদার হচ্ছে আল-জাজিরার বিরুদ্ধে।
বিজ্ঞাপন
আল-জাজিরার প্রকাশিত প্রতিবেদনটি একগুচ্ছ বিভ্রান্তিকর শ্লেষ আর বক্র ইংগিত ছাড়া আর কিছু না উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, এটি চরমপন্থি গোষ্ঠী জামায়াতে ইসলামির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু ব্যক্তির মাধ্যমে পরিচালিত রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত ‘অপপ্রচার’। যারা ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ রাষ্ট্রের প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক নীতির বিরোধিতা করে আসছে।
প্রতিবেদনটিতে ১৯৭১ সালের নৃশংস গণহত্যার কথা উল্লেখও করা হয়নি জানিয়েছে এতে আরও বলা হয়, জামায়াতের অপরাধীরা তখন লাখ লাখ বেসামরিক বাঙালিকে হত্যা করে। দুই লাখেরও বেশি নারীকে ধর্ষণ করে। এটা আল জাজিরা এবং তাদের প্রতিবেদনের প্রধান ভাষ্যকার ডেভিড বার্গম্যানের রাজনৈতিক পক্ষপাতেরই প্রতিফলন। বার্গম্যান ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তার মূল সূত্র একজন সন্দেহভাজন আন্তর্জাতিক অপরাধী, যাকে আল জাজিরাই ‘সাইকোপ্যাথ’ আখ্যায়িত করেছে। প্রধানমন্ত্রী বা বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ওই ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতার সামান্যতম প্রমাণও সেখানে নেই। মানসিক ভারসাম্যহীন কারও কথার ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছে যাওয়া একটি আন্তর্জাতিক নিউজ চ্যানেলের জন্য বড় ধরনের দায়িত্বহীনতার পরিচয়।
ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যারা লন্ডন এবং বিভিন্ন জায়গায় থেকে এগুলো করছে, তাদের এ বেপরোয়া ‘অপপ্রচারকে’ বাংলাদেশ সরকার প্রত্যাখ্যান করছে। বাংলাদেশের অসাধারণ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য যেখানে সরকারের ভূমিকা প্রমাণিত, সে অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক সরকারকে কক্ষচ্যুত করার লক্ষ্য নিয়ে সাজানো হীন রাজনৈতিক ছক বাস্তবায়নে আল জাজিরা নিজেদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে, এটা হতাশাজনক।
জেইউ/এএসএস/এমএইচএস