গত জানুয়ারি মাসে দেশে ৪২৭টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় ৪৮৪ জন নিহত ও ৬৭৩ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৭.২৩ শতাংশ।

৭টি জাতীয় দৈনিক, ৫টি অনলাইন নিউজপোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। যা শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহতের মধ্যে নারী ৯২ জন, শিশু ৪৭ জন। ১৫৯টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৬৮ জন। দুর্ঘটনায় ১৪৬ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৫৩ জন।

এই সময়ে ৪টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত, ৪ জন আহত এবং ৬ জন নিখোঁজ হয়েছেন। ১১টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত এবং ৬ জন আহত হয়েছেন।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৫৩টি (৩৫.৮৩ শতাংশ) জাতীয় মহাসড়কে, ১০৭টি (২৫.০৫ শতাংশ) আঞ্চলিক সড়কে, ৯৭টি (২২.৭১ শতাংশ) গ্রামীণ সড়কে, ৫৯টি (১৩.৮১ শতাংশ) শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ১১টি (২.৫৭ শতাংশ) সংঘটিত হয়েছে।

সময় বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুর্ঘটনাগুলো ঘটেছে ভোরে ২.১০ শতাংশ, সকালে ৩২.৩১ শতাংশ, দুপুরে ১৯.২০ শতাংশ, বিকেলে ২২ শতাংশ, সন্ধ্যায় ৯.৬০ শতাংশ এবং রাতে ১৪.৭৫ শতাংশ।

ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ১১২টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১২৮ জন। সবচেয়ে কম সিলেট বিভাগে। ৩২টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৭ জন। একক জেলা হিসেবে ঢাকা জেলায় সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ৩১টি দুর্ঘটনায় ৩৬ জন নিহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম ঝালকাঠি জেলায়। ২টি দুর্ঘটনায় ১ জন নিহত হয়েছেন।
 
দেশে সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ 
ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন; বেপরোয়া গতি; চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা; বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল; তরুণ ও যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো; জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা; দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা; বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি ও গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।

দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সুপারিশ
দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বাড়াতে হবে; চালকের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে; বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে; পরিবহনের মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা পার্শ্বরাস্তা (সার্ভিস লেন) তৈরি করতে হবে; পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে; গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে; রেল ও নৌ-পথ সংস্কার ও সম্প্রসারণ করে সড়ক পথের ওপর চাপ কমাতে হবে; টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে ও ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ এর সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

পিএসডি/জেডএস