যে লিখতে ও বলতে পারে সরকার তাকেই ভয় করে: মান্না
সরকার সবাইকে ভয় করে, তাই জেলে ঢুকিয়ে দেয় বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেছেন, যে লিখতে ও কথা বলতে জানে, সরকার তাকেই ভয় করে। আমরা চুরির খবরটা জানি, বলতে পারি তাই সরকার আমাদেরও ভয় করে। তাই ভয় পেয়ে মোস্তাক আহমেদকেও জেলে ঢুকিয়েছিল।
শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ আয়োজিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
মান্না বলেন, জেল কর্তৃপক্ষ বলার চেষ্টা করছে অসুস্থ মুশতাককে আমরা নিয়ে এসেছি। আর তাজউদ্দীন মেডিকেলের ডাক্তার বলছে আমরা মৃত মুশতাককে পেয়েছি। তাহলে মুশতাক কখন, কোথায় মারা গেছে? আলজাজিরা খবর ছাপায় সেটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানেন না, তথ্যমন্ত্রী জানেন না। তাহলে মুশতাক যে কারাগারে মারা গেল সেটা কী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও তথ্যমন্ত্রী জানেন? যদি না জেনে থাকেন তাহলে কেন আপনাদের চাকরি এখনো আছে? বলা হয়েছে মুশতাক হার্টঅ্যাটাকে মারা গেছে। অথচ তার পরিবারের কেউই জানতো না, তার আগে হার্টের সমস্যা ছিল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আজকে অনেকদিন হলো প্রধানমন্ত্রী খুব একটা কথা বলেন না। কিন্তু আগে দেখা যেত কিছু হতে না হতেই তিনি কথা বলতেন, সবার আগে সবকিছু জানতে এবং ব্যাখ্যাও দিতেন। কিন্তু এখন তিনি বলেন না, কেন?
বিজ্ঞাপন
ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টকে ‘জুলুম’ মন্তব্য করে মান্না বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের কোনো জবাব নেই। এটা একটা জুলুম। এটি মানুষের কথা বন্ধ করা, মুখ বন্ধ করা ও লেখা বন্ধ করার আইন। আমরা ওই আইন মানি না।
ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, আমরা এখানে সমবেত হয়েছি মুশতাক হত্যার বিচারের দাবিতে এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা নামে কালো আইন বাতিলের দাবিতে। ২৫ ফেব্রুয়ারি যেদিন মুশতাক মারা গিয়েছে সেদিন স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি জঘন্যতম দিন। এ ২৫ ফেব্রুয়ারিতে সেনাবাহিনীর ৫৭ জন কর্মকর্তাকে বিডিআর বিদ্রোহের নামে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
রমনা জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার হারুন অর রশীদকে উদ্দেশ্য করে নূর বলেন, আমরা জানি আপনি ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ ক্যাডার ছিলেন। কিন্তু আপনি যে গায়ে পোশাকটা জড়িয়েছেন, হাতে বন্দুক নিয়েছেন তা মেহনতী মানুষের ট্যাক্সের টাকায় কেনা হয়েছে। যদি জনগণের টাকায় কেনা বন্দুক নিয়ে ছাত্রলীগের ক্যাডারগীরি জণগণকে দেখাতে চান, তবে কিন্তু আমরা সেই ক্যাডারকে শিক্ষা দিতে পারি।
এসময় সমাবেশে বিভিন্ন স্লোগান লেখা পোস্টার দেখা যায়। পোস্টারগুলোতে লেখা ছিল— বিতর্কিত ডিজিটাল আইন বাতিল চাই; তারা আমার মুখের কথা কাইড়া নিতে চায়; আমরা আছি থাকব, যুগে যুগে লড়ব; গুম খুনের সরকার আর নাই দরকার; স্বৈরাচার নিপাত যাক গণতন্ত্র মুক্তি পাক।
বিক্ষোভ সমাবেশ আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক নুরুল আলম বেপারী, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক মহাসচিব নঈম জাহাঙ্গীর, রাষ্ট্রচিন্তার রাখাল রাহা, সাবেক রাষ্ট্রদূত সাকিব আলী প্রমুখ।
এমএইচএন/এসএম