শহীদ মিনারে এইচ টি ইমামের মরদেহে মানুষের শ্রদ্ধা, পাশেই দাঁড়িয়ে ছেলে তানভীর/ ছবি: শাকিল আহমেদ

‘হোসেন তৌফিক (এইচ টি) ইমাম কখনও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সদ্য প্রয়াত এ নেতার ছেলে ও সংসদ সদস্য তানভীর ইমাম।

তিনি বলেছেন, ‘তিনি যখন অসুস্থ, তখন তার কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়। কথা বলা বন্ধ হওয়ার আগে তিনি আমাকে বলেছিলেন, তুমি সবার কাছে আমার জন্য মাফ চাইবে। সবাই যেন আমাকে মাফ করে দেন। তিনি নিজেও জোরে জোরে আল্লাহর কাছে মাফ চেয়েছিলেন। এর পর দিন থেকেই তার কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়। আমরা আর কেউ তার কথা শুনতে পাইনি।’

বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) বেলা দেড়টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এইচ টি ইমামের নাগরিক শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানে পরিবারের পক্ষ থেকে তিনি এ কথা বলেন। তানভীর ইমাম বলেন, ‘আমার পরিবারের জন্য আজ ভীষণ শোকের দিন। আমি মনে করি, সারা দেশের মানুষের জন্যও বোধহয় শোকের দিন। আমার পিতা সব সময় মুক্তিযুদ্ধ, অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করতেন। এ আদর্শ থেকে কখনও বিচ্যুত হননি। আমার বাবার জীবনের মূল লক্ষ্য ছিল, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার গড়ে তোলা।’

তিনি বলেন, ‘তিনি জ্ঞান, মেধা ও পরিশ্রম দিয়ে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে কাজ করতেন। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার জন্য তিনি শেখ হাসিনার সঙ্গে কাজ করেছেন। তিনি সব সময় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মোতাবেক চলতেন। তার নিদের্শের বাইরে যাননি। প্রধানমন্ত্রীও তাকে সম্মান জানিয়েছেন।’

বুধবার (৩ মার্চ) দিবাগত রাত সোয়া ১টায় রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এইচ টি ইমাম। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। দুই সপ্তাহ আগে সিএমএইচে ভর্তি করা হয়েছিল তাকে।

এইচ টি ইমাম আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন। ২০০৯ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। ২০০৯ সালে জনপ্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টা এবং ২০১৪ সাল থেকে আমৃত্যু প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা ছিলেন তিনি। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির দুইবার কোচেয়ারম্যান এবং প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

দুপুরের দিকে এইচ টি ইমাম মরদেহ শহীদ মিনারে আনা হয়। সেখানে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আওয়ামী লীগের নেতারাও।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বিকেল সোয়া ৩টার দিকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়। গুলশানের আজাদ মসজিদে আসরের নামাজের পর তার দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে এইচটি ইমামকে। 

তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয় তার গ্রামের বাড়ি উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজ মাঠে। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় জানাজা শেষে তাকে ঢাকায় আসা হয়।

এইউএ/এফআর