পাকিস্তানিদের বুঝের সঙ্গে বিএনপির মিল রয়েছে : তথ্যমন্ত্রী
সাইকেল লেনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন তথ্যমন্ত্রী/ ছবি: ঢাকা পোস্ট
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘যারা ইতিহাস বিকৃতি ঘটায়, তারা ইতিহাসের পাতায় এক ধরনের দুষ্কৃতিকারী। স্বাধীনতার এই সুবর্ণজয়ন্তীতে আমি আশা করব, এত দিন ধরে বিএনপিসহ যেসব দল এই ভুলগুলো করেছে, তারা সেই ভুল থেকে বের হয়ে আসবে, তাহলেই দেশের মানুষ তাদেরকে সাধুবাদ দেবে। পাকিস্তানিদের বুঝের সঙ্গে বিএনপির বুঝের খুব মিল রয়েছে।’
শনিবার (১৩ মার্চ) চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সি-বিচে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) আয়োজিত সিটি আউটার রিং রোডে সাইকেল লেনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম, তারা (বিএনপি) স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর বছরে সত্যটাকে এবং ইতিহাসকে মেনে নেবেন। কিন্তু তারা জন্মলগ্ন থেকে যে ইতিহাস বিকৃতি ঘটিয়ে আসছে, ৭ মার্চ পালন করতে গিয়েও সেটি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘‘কয় দিন আগে আমরা ৭ মার্চ উদযাপন করেছি, যেদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম’ পরেরদিন পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর পক্ষ থেকে পাকিস্তানের সদরদফতরে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছিল, চতুর শেখ মুজিব কার্যত পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণা করে দিলেন। আমাদের তাকিয়ে থাকা ছাড়া উপায় ছিল না। তাকে আবার সেজন্য অভিযুক্তও করা যাচ্ছে না।’’
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, ‘‘বঙ্গবন্ধু এমনভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, জনগণ বুঝতে পেরেছিল কী করতে হবে। তখন সবাই মাঠে নেমে পড়েছিল ‘বাঁশের লাঠি তৈরি কর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর’ স্লোগানে। কিন্তু পাকিস্তানিরা সেটা বুঝতে পারেনি, বুঝলেও অভিযুক্ত করতে পারেনি। এখন দেখলাম ৭ মার্চ পালন করতে গিয়ে বিএনপি যে বক্তব্য দিল, পাকিস্তানিরা যেমনি বুঝতে পারেনি, তেমনি বিএনপিও বুঝতে পারেনি। পাকিস্তানিদের বুঝের সঙ্গে বিএনপির বুঝের খুব মিল রয়েছে।’’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজ থেকে কয়েকবছর আগে মানুষ ধারণা করেনি, পতেঙ্গা সৈকতে এমন একটি সি-বিচ হবে। এটি যখন প্রথম উন্মুক্ত করেছিল, সেটি সবাইকে অবাক করেছিল। একেবারে দুবাই সি-বিচের আদলে এত সুন্দর করে এটাকে সাজানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘পতেঙ্গা সি-বিচ আগেও ছিল, পৃথিবীর পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সেটির আধুনিকায়ন প্রয়োজন হচ্ছে, যেটি বহুবছর হয়নি, বঙ্গবন্ধু কন্যার হাত ধরে সিডিএ-এর মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রেক্ষিতে সি-বিচের সৌন্দর্যমণ্ডিত হয়েছে।’
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সি-বিচের অন্যতম আকর্ষণ ও উপাদান হচ্ছে বালুচর। এখানে আগে যে পরিমাণ বালুচর ছিল সেটা হারিয়ে গেছে। বিচ বলতে বালুচরকেই বোঝায়। দুবাই সি-বিচে প্রথমে বালু ছিল না। পরে বাইরের খেকে বালু এনে সেখানে বালুচর বানানো হয়েছে। প্রয়োজনে বাইরের থেকে বালু এনে এখানেও বালুচর করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রথম থেকেই সিডিএ-এর কাছে নিবেদন ছিল, এখানে একটা সাইকেল লেন রাখার। আমি বিদেশে পড়ালেখাকালে সাইকেল চালিয়ে ভার্সিটিতে আসা-যাওয়া করতাম। আমাদের শহরগুলোতেও যদি এ ধরনের সাইকেল লেন করতে পারলে ভালো হতো।’ চট্টগ্রাম শহরের দুয়েকটি রাস্তায়ও সাইকেল লেন করার জন্য সিডিএকে অনুরোধ জানান মন্ত্রী।
পরে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় সিটি আউটার রিং রোডে সাইকেল লেন উদ্বোধন শেষে সাইক্লিস্টদের সঙ্গে সাইকেল চালান তথ্যমন্ত্রী।
সিডিএ-এর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ, বোর্ড সদস্য মো. জসিম উদ্দিন, কে বি এম শাহজাহান, জসিম উদ্দিন শাহ, এম আর আজিম, রোমানা নাছরিন, সচিব আনোয়ার পাশা প্রমুখ।
কেএম/এফআর