পঞ্চগড়ে কাদিয়ানি সম্প্রদায়ের মাহফিলে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরাই হামলা চালিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা সেখানে হামলা পরিচালনা করেছে। আবার কাল নাকি বিএনপির নেতৃত্বে একটি টিম সেখানে যাচ্ছে। নিজেরাই মেরে আবার দরদ দেখানোর জন্য সেখানে যাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে পঞ্চগড়ের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। 

বুধবার (৮ মার্চ) সন্ধ্যায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে যুব মহিলা লীগ আয়োজিত আলোক প্রজ্জালন অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। যুব মহিলা লীগের সভাপতি ডেইজি সারোয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলি। 

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেশ এগিয়ে গেলেও একটি মহল বাংলাদেশ এগিয়ে যাক সেটি চায় না। তারা আজ দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইছে। গত কয়েক দিন ধরে দেশে বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে। এগুলো আসলে কী দুর্ঘটনা? না এগুলোর পেছনে নাশকতা যুক্ত আছে, সেটি একটি বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকে বলছে, এগুলোর পেছনে নাশকতা যুক্ত আছে। কারণ এই ঘটনা ঘটার পরপর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যেভাবে বড় গলায় কথা বলছেন, সরকারের দিকে আঙ্গুল দেখাচ্ছেন এতে মনে হয়, ডাল মে কুছ কালা হে। এগুলোর পেছনে নাশকতা আছে কি না সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে যারাই দায়ী থাক তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে সরকার বদ্ধপরিকর। 

মা-বোনদের সর্তক দৃষ্টি রাখার অনুরোধ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত সারাদেশে নাশকতা সৃষ্টি করার ছক এঁকেছে। তার আলামত শুরু হয়ে গেছে। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। নারীদের বলবো, আপনারা এগিয়ে যান, আপনারা দেশকে এগিয়ে যান। আপনাদের হাত ধরে দেশ এগিয়ে যাবে। আমাদের দেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছাবে।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পৃথিবীকে চমকে দিয়ে বাংলাদেশের নারী সমাজ উন্নতি লাভ করেছে। নারী সমাজ সর্বক্ষেত্রে তাদের মেধা, যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখছে। বৈশ্বিক সূচকে বাংলাদেশের নারীরা রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের দিক দিয়ে বিশ্বে পঞ্চম। আর এশিয়া ওশেনিয়া অঞ্চলে বাংলাদেশের নারীদের অবস্থান হচ্ছে দ্বিতীয়। বাংলাদেশের নারীরা রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে উপমহাদেশে প্রথম। শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের কারণে এটি হয়েছে। 

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকে নারীরা সেনাবাহিনীতে শুধু অফিসার পদে নয়, নারীরা সেনাবাহিনীতে সেনা সদস্য হিসেবেও কাজ করছে। নারীরা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, নারীরা ডিসি, এসপি। আজ থেকে ১৪ বছর আগে কেউ ভাবেনি নারী ডিসি হতে পারে, নারী এসপি হতে পারে, নারী মেজর জেনারেল। নারীরা প্রতি ক্ষেত্রে  এগিয়ে গেছে। 

তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, আজকে বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী নারী, বিরোধী দলীয় নেত্রী নারী, সংসদ নেতা নারী, সংসদ উপনেতা নারী, শিক্ষা মন্ত্রী নারী। এভাবে নারীর যে ক্ষমতায়ণ বাংলাদেশে হয়েছে পৃথিবীর আর কোনো দেশে গত এক দশকে এভাবে হয়নি। 

আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের নারী পৃথিবীকে পথ দেখাচ্ছে। আমাদের নারীরা এভারেস্ট জয় করেছে। আমাদের নারীরা হিমালয়ের সিংহে উঠেছে। আমাদের নারীরা মহাসাগর পাড়ি দিচ্ছে। আমাদের নারী ফুটবল দল পাকিস্তানকে ১২ গোল দিয়েছে। আমাদের নারী ফুটবল দল সার্ফ শিরোপা জয় করে গর্বিত করেছে। আমাদের নারী ক্রিকেট দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, কিন্তু পুরুষ ক্রিকেট দল পারেনি। সাম্প্রতিক সময়ে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় নারীদের ফল ভালো। প্রধানমন্ত্রী নারীবান্ধব নীতি প্রণয়ন, নারীবান্ধব বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি গ্রহণের কারণে এটি সম্ভব হয়েছে।

এমএসআই/জেডএস