যে ধারায় খালেদা জিয়াকে সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, সে ধারাতেই তার বিদেশে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

তিনি বলেছেন, সরকার মৃত্যুদণ্ডের আসামিদের মুক্তি দিয়ে দিচ্ছে, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের বাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছে, কিন্তু একমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে খালেদা জিয়ার সঙ্গে অন্যায় আচরণ করছে।

রোববার (৯ মে) এভার কেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়াকে দেখে এসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। 

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে সবকিছু করা হচ্ছে। এ বিষয়েও পরিবারই যা ভালো মনে করে করবে। 

খালেদা জিয়ার চিকিৎসা পরবর্তী কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, পরিবার তাকে বিদেশে নিতে আবেদন করেছে। এখন কী পদক্ষেপ নেওয়া দরকার তারাই ঠিক করে নেবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, এখন তো হাসপাতালে চিকিৎসকরা নেই। অ্যাটেনডেন্স চিকিৎসক এবং আমাদের চিকিৎসক ডা. জাহিদ আছেন। আমি তাকে (খালেদা জিয়া) দূর থেকে দুই মিনিট দেখেছি। এখন তিনি অক্সিজেনের সহায়তা ছাড়াই শ্বাস নিচ্ছেন।

এদিকে সাজাপ্রাপ্ত আসামির বিদেশ যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে মত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। বিএনপি চেয়ারপাসন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে তার ভাই শামীম ইস্কান্দারের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ মতামত দেয় আইন মন্ত্রণালয়।

গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়া করোনা পজিটিভ হন। সেসময় তার বাড়ির ৮ জন স্টাফও করোনায় আক্রান্ত হন। তবে ২৪ এপ্রিল নাগাদ স্টাফরা সবাই করোনা নেগেটিভ হয়ে গেলেও খালেদা জিয়া পজিটিভ থেকে যান। এতে উদ্বেগ বাড়ে পরিবার ও দলে। ২৭ এপ্রিল খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

গত সপ্তাহের সোমবার (৩ মে) সকালের দিকে শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে চিকিৎসকরা খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে স্থানান্তর করেন। এখন সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন আছেন। আক্রান্তের ২৭ দিন পর গতকাল শনিবার (৭ মে) করোনামুক্ত হন খালেদা জিয়া। 

২০১৭ সালের ১৮ অক্টোবর লন্ডনে তিন মাসের চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছিলেন তিনি। এরপর খালেদা জিয়া আর কোনো দেশে যাননি।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে ছিলেন খালেদা জিয়া। ২৫ মাস কারাভোগের পর করোনা পরিস্থিতিতে গত বছর ২৫ মার্চ ৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়ার সাজা শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। এরপর দ্বিতীয় দফায় আরও ছয় মাস এবং সর্বশেষ গত ২৫ মার্চ থেকে সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়।

এএইচআর/জেডএস