মেয়াদোত্তীর্ণ কালো আইন অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা হয়েছে। এটি মেয়াদোত্তীর্ণ কালো একটি আইন। সাংবাদিককে হেনেস্তা ও তার বিরুদ্ধে মামলার প্রকৃত ঘটনা উন্মোচনের জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানাচ্ছি।
বৃহস্পতিবার (২০ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত ‘ফিলিস্তিনের উপর ইসরাইলের পৈশাচিক হামলা বন্ধ এবং দৈনিক প্রথম আলোর অনুসন্ধানী প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের মুক্তি’র দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে এসব বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না হওয়া পর্যন্ত আমরা রোজিনা ইসলামের জামিন দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। যারা সাংবাদিক রোজিনাকে হেনেস্তা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। গণমাধ্যম কর্মীদের চাকরির সুরক্ষা এবং কাজের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের সঙ্গে যে বর্বরতা হয়েছে তা ক্ষমার অযোগ্য। একজন অনুসন্ধানী প্রতিবেদক তথ্য সংগ্রহ করবেন এতে অপরাধের কিছু নেই। অনুসন্ধানী প্রতিবেদকদের জন্যই আমরা জানতে পারি বিভিন্ন দফতরে লুটপাটের খবর। করোনাকালে মাস্ক, পিপিই, হাসপাতালের যন্ত্রপাতি ক্রয়ে যে দুর্নীতি হয়েছে তা অনুসন্ধানী প্রতিবেদকরাই জাতির সামনে তুলে ধরেছেন। আবার করোনা টিকা আমদানি করে একটি কোম্পানি ইতোমধ্যেই ৫০ কোটি টাকা লোপাট করেছে। বর্তমানে টিকা আমদানিতে কী হচ্ছে আমরা জানি না। রোজিনা ইসলাম তার পেশার স্বার্থেই তথ্য সংগ্রহ করেছেন। জাতিকে জানাতে এবং দেশের স্বার্থেই তিনি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তথ্য সংগ্রহ কখনো চুরি হতে পারে না।
বিজ্ঞাপন
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট হচ্ছে মেয়াদোত্তীর্ণ কালো আইন। ১৯২৩ সালে ব্রিটিশ সরকার তাদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে এ আইনটি পাস করে। স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এমন কালো আইন জনস্বার্থ বিরোধী। সরকার যখন তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন করেন, সে সময় আমরা জনগণের পক্ষ থেকে দাবি করেছিলাম, যে রাষ্ট্রবিরোধী ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ সেসব তথ্যই শুধু গোপন রাখার ব্যবস্থা রাখুন। বাকি তথ্য জনস্বার্থে উন্মুক্ত রাখা প্রয়োজন। এখন প্রতীয়মান হচ্ছে, তথ্য অধিকার আইনটি শেষ পর্যন্ত সেভাবে প্রণয়ন করা হয়নি। বর্তমানে তথ্য অধিকার আইনটিও উপনিবেশিক ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে।
জিএম কাদের ফিলিস্তিনে ইসরাইলের বর্বর হামলার সমালোচনা করে বলেন, ফিলিস্তিনিদের জীবন বাঁচাতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী নিয়োগ করতে হবে। প্রয়োজনে জাতিসংঘের নেতৃত্বে শক্তি প্রয়োগ করে বর্বর হামলা থেকে নিবৃত করতে হবে ইসরাইলকে। আলোচনার ভিত্তিতে স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের উদ্যোগ নিতে হবে।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, জাতীয় পার্টির কো চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল আলম রুবেল, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি, অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া।
এমএইচএন/এসকেডি