৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ৭৩ এর কলঙ্কিত রেকর্ড ভেঙেছে আ.লীগ: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর পুরাতন ছবি
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ৭৩ সালের ৭ মার্চের জাতীয় নির্বাচনে নিজেদের কলঙ্কিত রেকর্ড ভেঙেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
রিজভী বলেন, স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয় ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ। স্বাধীনতা অর্জনের সোয়া এক বছরের মাথায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ জনগণের ওপর বিশ্বাস রাখতে পারেনি। তাদেরকে সন্ত্রাস, ভোট ডাকাতি, কারচুপির আশ্রয় নিতে হয়েছিল। ৩০০ আসনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিজেরা নিয়েছিল ২৯৩ আসন। মাত্র ৭টি আসন বিরোধী দলকে দেয়। ৭৩ সালের নির্বাচনে জাসদ ২৩৭টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও দেয়া হয়েছিল মাত্র ১টি আসন। দুর্নীতি, সন্ত্রাস গণতন্ত্র হত্যা, ভোটাধিকার হরণ, আওয়ামী লীগের ইতিহাসে নতুন নয়।
রিজভীর দাবি- ইতিহাসে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচনে বিশ্বাস করে না। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনী সংস্কৃতিকে তারা কখনোই পাত্তা দেয় না। মানুষের ভোটাধিকার হরণ করতে পরিকল্পিতভাবে ২০১১ সালে সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করে। এরপর যেকোনো উপায়ে ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত এই সরকারের যতগুলো নির্বাচন হয়েছে তা ছিল একতরফা। নিশিরাতে ব্যালটবাক্স ভর্তি করাসহ ভোটসন্ত্রাসের বিচিত্র দৃশ্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রকাশিত হয়।
বিজ্ঞাপন
৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রায় সব রাজনৈতিক দল বর্জন করেছিল উল্লেখ করে রিজভী বলেন, কিন্তু শেখ হাসিনা ও তার দলকে ক্ষমতায় রাখার জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত দৃশ্যমান হয়। তৎকালীন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব মিসেস সুজাতা সিং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদকে শেখ হাসিনার পাতানো নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য কী হুমকি দিয়েছিলেন তা এরশাদ নিজেই গণমাধ্যমে বলেছিলেন। তারপরেও জাতীয় পার্টি তাদের সব মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে। পরে বন্দুকের নলের মুখে ভয় দেখিয়ে তাদের কয়েকজনকে বিজয়ী ঘোষণা করে গৃহপালিত বিরোধী দলের আসনে বসানো হয়।
তিনি আরও বলেন, তার প্রমাণ প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেছিলেন- আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করতে প্রত্যেক কেন্দ্রেই আমরা দলীয় চেতনার ম্যাজিস্ট্রেটসহ প্রয়োজনীয় লোক নিয়োগ দিয়েছি।
রিজভী বলেন, এরপর ১৫৩ জন আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি ঘোষণা করা হয়। বাকি যেসব আসনগুলোতে ভোট হয়েছিল সেখানে শতকরা ৫ শতাংশ ভোটও পড়েনি। জনগণ সেই নির্বাচন ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছিল।
সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের একতরফা জাতীয় নির্বাচন দেশি-বিদেশি গভীর চক্রান্তের নির্বাচন ছিল বলেও দাবি করেন রিজভী।
এএইচআর/এইচকে