নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না

রূপগঞ্জের হাশেম ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ কোম্পানির সেজান জুস কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৫২ জন নিহত এবং অর্ধশতাধিক আহত হবার ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। 

আগ্নিকাণ্ডের সঠিক তদন্ত দাবি করে তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পর এরকম নৃশংস ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য নয়। স্বাধীনতার ৫০ বছরেও আমরা দেশের মেহনতি মানুষের জন্য নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করতে পারিনি। এই সময়ে যারা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন, তারা কেউই এই দায় এড়াতে পারেন না।

শনিবার (১০ জুলাই) সন্ধ্যায় সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। বিবৃতিতে মান্না বলেন, এরকম নৃশংস ঘটনা ঘটা এই দেশে এখন স্বাভাবিক নিয়মে পরিণত হয়েছে। অপশাসন, দুঃশাসনের কারণে লুটেরা স্বার্থান্বেষী পুঁজিবাদী গোষ্ঠীর উত্থান ঘটেছে, যারা কেবল মুনাফা বৃদ্ধির চেষ্টায় লিপ্ত। তারা শ্রমিকদের স্বার্থ এমনকি জীবনের নিরাপত্তার কথাও ভাবে না। সেজান জুস কারখানায় শিশু শ্রমিক ছিল, ছিল না অগ্নি নির্বাপণ কিংবা জরুরি বহির্গমন সিঁড়ি। মূল সিঁড়িও ছিল প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত সরু। গ্রুপের চেয়ারম্যান এই ঘটনার দায় নেবেন না, কারণ তিনি তো আগুন লাগাননি। অথচ তার পুরো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি, পুরো ভবনই যে নিয়ম বহির্ভূতভাবে নির্মিত এবং পরিচালিত হচ্ছিল তা তার বোধগম্য হয়নি।  

তিনি দাবি জানিয়ে বলেন, প্রত্যেকবার তদন্ত কমিটি গঠন হয় কিন্তু অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয় না। কখনো সেই প্রতিবেদনই প্রকাশ পায়নি, কখনো প্রকাশিত হলেও সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সেজান জুস কারখানার ঘটনার পরও তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। এই তদন্ত প্রতিবেদন যেন সঠিকভাবে প্রকাশিত হয় এবং যথাযথভাবে তা পালন করা হয়, সেই দাবি জানাচ্ছি।  

তিনি বলেন, আমি নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। একটি কল্যাণরাষ্ট্রই পারে দেশের শ্রমিক শ্রেণির স্বার্থ, নিরাপত্তা আর বেঁচে থাকার অধিকার নিশ্চিত করতে। পুঁজিবাদের বিকাশের সাথে সাথে শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন কেবল একটি কল্যাণরাষ্ট্রের পক্ষেই সম্ভব। নাগরিক ঐক্য সেই কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়েই লড়াই করছে। 

এমএইচএন/এইচকে