চট্টগ্রামে ভোটের আগে অবস্থান কর্মসূচির হুঁশিয়ারি বিএনপির
১৯ জানুয়ারি থেকে গ্রেফতার হওয়া বিএনপি নেতাকর্মীদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহার না হলে চট্টগ্রাম নির্বাচন কার্যালয়ে কাউন্সিলরদের নিয়ে অবস্থান কর্মসূচিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন।
সোমবার (২৫ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় নাসিমন ভবন নগর বিএনপির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।
বিজ্ঞাপন
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, গত ১০ মাস করোনার সময়েও মানুষের কাছে গিয়েছি ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে। নির্বাচনের ঠিক দুইদিন আগে নির্বাচনের পরিবেশটি ঘোলাটে করতে মাস্তান, চাঁদাবাজ, ইয়াবা ব্যবসায়ী দিয়ে পাঁয়তারা করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কিছু অতি উৎসাহী পুলিশের দ্বারা শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, গতকাল সিইসি এসেছিলেন, উনার কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট বক্তব্য আশা করেছিলাম। আওয়ামী লীগের মধ্যে মারামারিতে তিনজন নিহত হয়েছে, আমাদের কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়েছে, প্রচারগাড়ি ভাঙচুর হয়েছে, নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশের হয়রানি চলছে-এসব বিষয়ে তিনি বক্তব্য দেবেন কিন্তু আমরা তা পাইনি।
শাহাদাত হোসেন বলেন, গত ৭ দিন ধরে যে বিষয়টি লক্ষ্য করছি, কিছু গায়েবি ও সাজানো মামলা করা হয়েছে প্রতিটি থানায়। ১৯ জানুয়ারি থেকে প্রতিটি থানায় ১০টির উপর মামলা হয়েছে। এক হাজারের বেশি আসামি করা হয়েছে। ৬৯ জনের বেশি গ্রেফতার করা হয়েছে গতকাল রাত পর্যন্ত।
পুলিশের হয়রানি থেকে নারী, শিশুরা পর্যন্তও বাদ যাচ্ছে না অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, রোববার রাতে বাকলিয়া থানার নেত্রী মুন্নি তার ১২ বছরের শিশুকে ধরে নিয়ে গেছে। নাগরিক ঐক্য পরিষদের বীর মুক্তিযোদ্ধা একরামুল করিমকে রোববার রাতে বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায় চকবাজার থানা পুলিশ। শুধু তাকে নয়, তার ছেলেকেও ধরে নিয়ে যায়। অথচ তার ছেলে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন।
২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে। ভোট যত এগোচ্ছে, নির্বাচনের মাঠ তত উত্তপ্ত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘাতে দুজন খুন হয়েছেন। এ নির্বাচনে মেয়র পদে ধানের শীষ প্রতীকে লড়ছেন ডা. শাহাদাত হোসেন আর নৌকা প্রতীকে লড়ছেন এম রেজাউল করিম চৌধুরী।
শাহাদাত বলেন, চট্টগ্রামের নির্বাচন কর্মকর্তাকে আমরা এ পর্যন্ত ৪০টি অভিযোগ দিয়েছি। এসবের কোনো সমাধান হয়নি। গত ৭ দিন ধরে যেসব মিথ্যা মামলা হয়েছে, এই মিথ্যা মামলায় যাতে গ্রেফতার করা না হয় সেজন্য কমিশনকে বলেছি। তাই আমাদের দাবি এসব মামলা প্রত্যাহার করা হোক। যারা গ্রেফতার হয়েছে তাদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হোক।
তিনি বলেন, যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মুক্তির জন্য নির্বাচন কমিশনে যাবো। আমরা গতকাল জানিয়েছি। রাত ১১টায়, এরপর ভোর রাতে আরও ৮-১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সবমিলিয়ে গতকাল ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সম্পূর্ণ তালিকা আমাদের কাছে আছে। এই তালিকা নিয়ে আমরা চট্টগ্রাম নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ে যাবো।
দাবি আদায়ে কমিশনের কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে শাহাদাত বলেন, গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তি না দিলে আমরা সব কাউন্সিলর নিয়ে কমিশনের কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করবো। তাদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে, এই আশ্বাস নির্বাচন কর্মকর্তাকে দিতে হবে। একটা সময় বেঁধে দেবো নেতাকর্মীদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহার করার জন্য। যদি প্রতিশ্রুতি দেন, তাহলে অবস্থান কর্মসূচি করবো না। অন্যথায় আমরা অবস্থান নেবো।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান প্রমুখ।
এনএফ