প্রধানমন্ত্রীর নামফলক ‘ভাঙা’ সেই আশকর আবারও নৌকার মাঝি
আশকর আলী
কেরানীগঞ্জের বাস্তা ইউনিয়নের বিদায়ী চেয়ারম্যান আশকর আলীর বিরুদ্ধে রয়েছে ধলেশ্বরী ১ ও ২ নম্বর সেতুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামফলক ভাঙার অভিযোগ।
২০০৮ সালের পর বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে ‘অনুপ্রবেশ’ করায় এলাকায় ‘হাইব্রিড নেতা’ হিসেবে আশকরের পরিচিতি রয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে রয়েছে জমি দখলসহ নানা অভিযোগ। এত অভিযোগের পরও তিনি আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পেয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। তার মনোনয়ন পাওয়ায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় ত্যাগী আওয়ামী নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, বারবার বিতর্কিত লোককে মনোনয়ন দেওয়ার কারণে এ এলাকায় দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।
দলীয় নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন, বাস্তা ইউনিয়নে কোনো ধরনের বর্ধিত সভা না করেই এ প্রার্থীর নাম জেলা কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। তৃণমূল পর্যায়ের কারো মত নেওয়া হয়নি। ‘বড় নেতার মদদ’ থাকা এবং নিজে সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় প্রভাব খাটাচ্ছেন আশকর আলী।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে বাস্তা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ১ নম্বর সদস্য এইচ এম অহিদুল হক বলেন, এ ইউনিয়নে কোনো বর্ধিত সভা হয়নি। কয়েকজন নেতা সব সদস্যের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। শেখ হাসিনার নেমপ্লেট (নামফলক) ভাঙা সেই আশকরকেই নৌকার প্রার্থী করেছেন।
তিনি বলেন, এবার আশকর মনোনয়ন পাবেন, আমরা তা কোনোভাবে প্রত্যাশা করিনি। তার জন্য ত্যাগী নেতারা এবারো মনোনয়ন পেলেন না। জামায়াত-বিএনপির দোসর আবারও নৌকার প্রার্থী হয়েছেন, যা আমাদের জন্য লজ্জার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আশকর আলীকে চূড়ান্ত মনোনয়ন না দেওয়ার অনুরোধ করে দলের সভাপতির কাছে একটি চিঠিও দিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা। সেখানে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ও সাবেক আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামকেও সংযুক্ত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা দাবি করেন, আশকর আলী বুড়িগঙ্গা ১ নম্বর সেতুতে থাকা প্রধানমন্ত্রীর নামফলক ভেঙে দিয়েছিলেন। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়। বাস্তা ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি আবুল হাসেমের করা অভিযোগে তখন সাহারা খাতুন ও অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর শাস্তির সুপারিশ করেছিলেন। কিন্তু পরে বিষয়টি ভিন্নভাবে ম্যানেজ করেছেন তিনি।
এ নেতা আরও বলেন, যেসব অপকর্মের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে রয়েছে, সেসবের প্রমাণসহ আমরা সভানেত্রীর কাছে আবেদন করেছি, যেন চূড়ান্তভাবে তার জায়গায় যেকোনো ত্যাগী নেতাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।
জানা গেছে, নামফলক ভেঙে বর্তমানে ওই জমি দখল করে মার্কেট গড়েছেন আশকর আলী। অবৈধ জমি দখলের অভিযোগে কেরানীগঞ্জ থানায় তার নামে একটি মামলাও রয়েছে।
এ বিষয়ে বাস্তা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী জিন্নাত আলী জিন্না বলেন, আমরা কেউ এ মনোনয়ন নিয়ে সন্তুষ্ট নই। আমাদের কমিটির ৬৯ জন নেতাকর্মীই তার বিরুদ্ধে। তার পক্ষে হয়ে কাজ করা যাবে না।
তিনি বলেন, আমরা আন্দোলন করছি। তার বিরুদ্ধে সবখানে অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু বারবার একজন বড় নেতার ছত্রছায়ায় তিনি মনোনয়ন নিয়ে আসছেন।
এইউএ