বিএনপিকে মিথ্যাচার বন্ধ করে নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির আহ্বানে সাড়া দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ। তিনি বলেছেন, ‘আমরা অনুরোধ করব মিথ্যাচার-বিভ্রান্তি বন্ধ করে আপনারা মহামান্য রাষ্ট্রপতির আহ্বানে সাড়া দিন, আপনাদের মতামত সেখানে পেশ করুন। আপনাদের যদি ভালো পরামর্শ থাকে, অবশ্যই সেটা মহামান্য রাষ্ট্রপতি বিবেচনা করতে পারেন। সে পরামর্শ আপনারা দিন।’

মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলার মুখ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

হানিফ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য দেশে যে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি, যেটা সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি সেটা অনুসরণ করে রাষ্ট্রপতি সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করছেন। তাদের মতামতে সার্চ কমিটি গঠন করে এবং তাদের দেওয়া নাম যাচাই-বাছাই করে আমাদের নির্বাচন কমিটি গঠন করা হবে। এটাই হলো গণতান্ত্রিক, সবচেয়ে উত্তম পন্থা। সেটাকে নিয়েও বিএনপি আজ সমালোচনা করছে।’

আগামী বছরের মধ্যেই নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে আইন করবে আওয়ামী লীগ সরকার আশা প্রকাশ করে আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘গত ১২ বছর ধরে ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ সরকার। এ ১২ বছরে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজে আমাদের সময় অতিক্রম হয়েছে। ১৯৭১ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলমান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যার রায় কার্যকর হয়েছে, সরকার গঠনের মাত্র ৫৩ দিনের মাথায় ২০০৯ সালে পিলখানার মতো ঘটনা ঘটে। তারও বিচার দীর্ঘদিন চলেছে এবং সরকারকে তা শেষ করতে হয়েছে। নির্বাচন কমিশন আইনটা আমরা এখনও করতে পারিনি, এর প্রক্রিয়া চলছে। আমরা আশা করি, আগামী বছরের মধ্যে এই আইন আমরা করতে পারব।’

বিএনপি কেন ক্ষমতায় থাকাকালীন নির্বাচন কমিশন গঠন করেনি— এমন প্রশ্ন করে তিনি বলেন, ‘তারা বলছে এ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না। এটা প্রশাসনের নাটক। এরকম নানা অভিযোগ করে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চাচ্ছে তারা। আমরা প্রশ্ন রাখতে চাই, আপনারা যখন রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিলেন তখন আপনারা নির্বাচন কমিশন গঠন করেননি কেন?’

বিএনপিকে উদ্দেশ করে হানিফ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে আপনারা যে কলঙ্ক তৈরি করে দিয়ে গিয়েছিলেন, সে কলঙ্ক তো এখনও জাতির মনে আছে। ১ কোটি ৩০ লাখ ভুয়া ভোটার বানিয়ে ভোটার লিস্ট করেছিলেন। আপনারা এ ধরনের মিথ্যা অপকর্মগুলো করেছিলেন। সেটাকে ঢাকার জন্য সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন।’

ওয়াজ মাহফিলের মাধ্যমে মানুষকে ধর্মান্ধ করা হচ্ছে— মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, ‘১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর এ দেশে যারা ক্ষমতা দখল করে বসেছিল, তাদের নেতৃত্বেই আমাদের সংস্কৃতিকে ধ্বংস করা হয়েছে। পঁচাত্তরের পর থেকে এ জাতিকে তারা উল্টো পথে নিয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘ধর্মকে রাজনীতি হিসেবে ব্যবহার করার জন্য তারা সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংযুক্ত করেছে। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাকলে কি ক্ষতি, কি লাভ আছে সেটা আমি জানি না। কারণ পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ তার চিন্তা-চেতনা সংবিধানের আলোকে করে না।’

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন— বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনাম, বাংলার মুখের সভাপতি সাইফুল আজম বাশার প্রমুখ।

এমএইচএন/এসএসএইচ