মাশিয়াত রশীদ

যুক্তরাষ্ট্রে দুর্নীতির দায়ে মাশিয়াত রশীদ (৪০) নামে এক বাংলাদেশিকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত। মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ফেডারেল কোর্ট গত ৩ মার্চ এ রায় ঘোষণা করেন। ব্যথানাশক ওষুধ এবং ভুয়া চিকিৎসার নামে ইনস্যুরেন্স কোম্পানির দেড়শ মিলিয়ন ডলার জালিয়াতি করে আত্মসাতের অভিযোগে তাকে এ সাজা দেওয়া হয়।

একই চক্রের সদস্য হিসেবে ১২ চিকিৎসকসহ আরও ২১ জনকে আদালত বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন। মিশিগান ইস্টার্ন ডিসট্রিক্টের ইউএস অ্যাটর্নি সাইমা শফিক মহসিন ও বিচার বিভাগের ক্রিমিনাল ডিভিশনের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নিকলাস এল ম্যাকুয়াইড এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, মিশিগান এবং ওহাইও স্টেটভিত্তিক ‘ট্রাই-কাউন্টি ওয়েলনেস গ্রুপের সিইও মাশিয়াত রশিদকে কারাদণ্ডের পাশাপাশি প্রতারণামূলকভাবে হাতিয়ে নেওয়া অর্থ ইনস্যুরেন্স কোম্পানিকে ফিরিয়ে দিতে হবে। ২০১৭ সালে মাশিয়াত রশিদ গ্রেফতার হোন। ২০১৮ সালে নিজে থেকেই তিনি দোষ স্বীকার করেন।

মামলার বিবরণে বলা হয়, ২০০৮ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত রশিদ ওই ট্রাই-কাউন্টি ওয়েলনেস গ্রুপের সিইও ছিলেন। এর অধীনে বেশকিছু ক্লিনিক চালু করা হয়, যারা সত্যিকারের কিছু রোগীর সঙ্গে আদৌ অসুস্থ নন এমন গরিব লোকদের সংগ্রহ করে। ব্যথানাশক ইনজেকশনের আদৌ প্রয়োজন না হলেও অনেককে তা প্রদান করা হয়। এভাবে অনেক মানুষকে আসক্ত করা হয় ওষুধ সেবনে। শত শত রোগী চিকিৎসার নামে মোটা অংকের অর্থ ড্র করা হয় ইনস্যুরেন্স কোম্পানি থেকে।

তদন্তের সময় অনেকে সাক্ষ্য দিয়েছেন যে ওই ক্লিনিকে বা চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার আগে যতটুক ব্যথা ছিল, পরে তা চরম আকার ধারণ করে। অর্থাৎ ঘন ঘন ইনজেকশন দিতে হয়েছে তাদের। ক্লিনিকে প্রতিনিয়ত চিৎকার শোনা গেছে। রোগীরা যন্ত্রণায় কান্নাকাটি করেছেন। তদন্ত কর্মকর্তারা আদালতে উল্লেখ করেছেন, মাশিয়াত রশিদের নেটওয়ার্কের চিকিৎসকরা ৮ বছরের বেশি সময় ধরে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছিলেন।

এদিকে, ভয়াবহ এ দুর্নীতিতে সম্পৃক্তের ঘটনায় বিব্রত রাজ্যে বসবাসকারী বাংলাদেশি প্রবাসীরা। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা এ ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছেন।

এমএইচএস