বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তর ওয়াশিংটন ডিসি এলাকায় বসবাসরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক ছাত্রছাত্রীদের সংগঠন ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই ফোরাম ইনকরপোরেটেড (ডুয়াফি) বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছে।

এ উপলক্ষে দেশটির স্থানীয় সময় শনিবার (২৭ মার্চ) ‘মুক্তির পঞ্চাশ’ শিরোনামে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। জুম প্লাটফর্মে আয়োজিত অনুষ্ঠানটির বিশেষ আকর্ষণ ছিল মহান মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিচারণ। এতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ও বীর বিক্রম ড. তৌফিক-ই-ইলাহি চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব উদ্দিন আহমদ, বীর বিক্রম এবং স্বাধীনতা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ হাসান ইমাম।

আলোচকরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার রূপকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন এবং মুক্তিযুদ্ধের শহীদ ও বীরাঙ্গনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। স্মৃতিচারণমূলক পর্বটি সঞ্চালনা করেন ড. আশরাফ আহমেদ।

একাত্তরের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তৌফিক-ই-ইলাহি চৌধুরী বলেন, মুক্তিযুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ ছিল। এটি পাক-ভারত যুদ্ধ ছিল না, মুক্তিযুদ্ধ ছিল বাংলার মানুষের জনযুদ্ধ।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য দেন ডুয়াফির সভাপতি ভয়েস অব আমেরিকায় কর্মরত বিশিষ্ট  সাংবাদিক শতরূপা বড়ুয়া। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. সহিদুল ইসলাম ও ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (ডুয়া) সভাপতি বিশিষ্ট শিল্পপতি ও ব্যবসায়ী নেতা এ কে আজাদ অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।

রাষ্ট্রদূত মো. সহিদুল ইসলাম তার বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংগঠনগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশ দূতাবাস ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এ কে আজাদ ডুয়াফির এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত ডুয়ার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ডুয়াফির সদস্যরা যাতে অংশ নিতে পারেন সেই ব্যাপারে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দেন।

‘মুক্তির পঞ্চাশ’ অনুষ্ঠানটিতে স্বাধীনতা সংগ্রামের অর্থনৈতিক পটভূমির ওপর অর্থনীতিবিদ ড. আখতার মাহমুদের সঞ্চালনায় এক আলোচনায় অংশ নেন অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুবুল মোকাদ্দেম আকাশ ও পারভেজ ইমদাদ।
 
আবৃত্তি, গান, ভিডিও প্রদর্শনীসহ একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবাসী সাবেক ছাত্রছাত্রী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শততম বর্ষপূর্তির বছরে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপন করেন। এদিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী মুক্তিযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায়ের সঙ্গে আলাপচারিতা ও তার গান।

মারুফা ইসহাক ও এ্যান্থনী পিউস গোমেজের উপস্থাপনায় ডরথী বোসের কণ্ঠে বাংলদেশের জাতীয় সংগীত ও অন্তরা রহমান দোহার কণ্ঠে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। খ্রীষ্টফার তাপস গমেজ, প্রিসিলা রড্রিক্স ও মিলিয়া আলী গান এবং সাধক চক্রবর্তী গিটার পরিবেশন করেন। অদিতি সাদিয়া রহমান, সাদিয়া খান (জেনী) ও এ কে এম খায়রুজ্জামানের পরিবেশিত আবৃত্তি সবাইকে মুগ্ধ করে। অনুষ্ঠানে প্রবাসে বেড়ে ওঠা শিশুদের বাংলাদেশ নিয়ে আঁকা ছবিও প্রদর্শিত হয়।

অনুষ্ঠান শেষে ডুয়াফির সাধারণ সম্পাদক ড. ইসরাত সুলতানা মিতা সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

এসএসএইচ