ভিয়েনার বাংলাদেশ দূতাবাস ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালন করেছে। এ উপলক্ষে শনিবার (১৭ এপ্রিল) দূতাবাস একটি অনলাইন আলোচনার আয়োজন করে। অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি, স্লোভেনিয়া ও স্লোভাকিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতারা, সাংবাদিক, ছাত্র ও অন্যান্য ব্যক্তিরা উক্ত আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন।     

পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আলোচনা অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। আলোচনার শুরুতে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। আলোচকেরা মুজিবনগর দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরেন। 

তারা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে পাকিস্তানি শোষক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মুক্তিসংগ্রামের চলা শুরু হয়। ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের গঠন ও ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণের মাধ্যমে তা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে। মুক্তিযুদ্ধকে সঠিকভাবে পরিচালনা, বাংলাদেশের পক্ষে বৈশ্বিক জনমত সৃষ্টি ও বন্ধুপ্রতীম দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে অসামান্য ভূমিকা পালন করেছিল মুজিবনগর সরকার।  

সমাপনী বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি জনাব মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। রাষ্ট্রদূত নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গণপরিষদ গঠন, বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণার আলোকে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র তৈরি ও বাস্তবায়নের বিষয়ে আলোচনা করেন। এছাড়াও মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক দিক-নির্দেশনা দেওয়া, তাদের মনোবল বৃদ্ধি ও মুক্তিযুদ্ধের সার্বিক নেতৃত্ব দানসহ স্বাধীনতা অর্জনে মুজিবনগর সরকারের অসামান্য অবদান ও ঐতিহাসিক তাৎপর্য তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, মুজিবনগর সরকার গঠিত হওয়ার পরে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে গ্রহণযোগ্যতা লাভ করে। যা স্বাধীনতা সংগ্রামের স্বপক্ষে বিশ্ব জনমত সৃষ্টিতে সহায়ক হয়েছিল।   

আলোচনা পর্বের শেষে জাতির পিতা ও তার পরিবারের সকল শহীদ, জাতীয় চার নেতা এবং মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদদের আত্মার মাগফিরাত এবং দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলা গ্রামের আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথগ্রহণ করে। এই বৈদ্যনাথতলাকেই পরে মুজিবনগর হিসেবে নামকরণ করা হয়।

তাই দিনটি স্বাধীনতা সংগ্রামের সুদীর্ঘ ইতিহাসে চিরভাস্বর এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর বর্বরোচিত হামলা চালানোর পর একই বছরের ১০ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্র রূপে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা ঘোষণা করা হয়।

অস্থায়ী সরকারের সফল নেতৃত্বে ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ করে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। এ দিন ঘোষিত ঘোষণাপত্রে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন ও অনুমোদন করা হয়।

ওএফ